• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের পটুয়াখালী
ব্রেকিং:
যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

প্রশিক্ষিত সামরিক বাহিনী গঠনে বিভিন্ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি

আজকের পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ২ ডিসেম্বর ২০২১  

সশস্ত্র বাহিনী আধুনিকায়নে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘প্রশিক্ষিত ও যুগোপযোগী সামরিক বাহিনী গঠনে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি।’

বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) ‘ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স-২০২১’ এবং ‘আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্স-২০২১’-এর গ্র্যাজুয়েশন সেরিমনিতে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। মিরপুর ক্যান্টনমেন্টের শেখ হাসিনা কমপ্লেক্সে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর সশস্ত্র বাহিনী আধুনিকায়নে সরকার নানা পদক্ষেপ নেয়।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার দায়িত্বে থাকা এই প্রতিষ্ঠানের ওপর বারবার আঘাত এসেছে, ক্যু হয়েছে। এখানে একটা শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং উন্নত করার জন্য আমরা কাজ করেছি। স্বাধীন দেশ হিসাবে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী বিশ্বসভায় মর্যাদা নিয়ে চলবে, সেই আকাঙ্ক্ষা নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা শুরু করি।’

সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যাতে আমাদের সেনাবাহিনী চলতে পারে। কারণ হচ্ছে, জাতিসংঘের শান্তিবাহিনীতে আমাদের সেনাবাহিনী অংশগ্রহণ করে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে তাদের চলতে হয়। তাই আধুনিক প্রযুক্তি, অস্ত্রশস্ত্র থেকে শুরু করে সব ধরনের সরঞ্জমাদি সম্পর্কে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী সবসময় প্রশিক্ষিত হবে এবং জ্ঞান লাভ করবে। সেটাই আমার চেষ্টা, যেন কারও থেকে আমরা পিছিয়ে না থাকি।’

স্বাধীনতা পরবর্তী দেশ গঠনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘মাত্র সাড়ে তিন বছরে এই বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে গড়ে তোলার সঙ্গে সঙ্গে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের উপযোগী ও প্রয়োজনীয় সশস্ত্র বাহিনীও গড়ে তোলেন তিনি। তিনি চেয়েছিলেন স্বাধীন দেশে বাঙালিদের জন্য একটি পেশাদার ও প্রশিক্ষত সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলবেন।’

সশস্ত্র বাহিনীর জন্য বঙ্গবন্ধুর নেওয়া বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (বঙ্গবন্ধু) সবসময় গণমানুষের আর্থ-সমাজিক উন্নয়নের কথা চিন্তা করতেন। বিশেষ করে দেশের দরিদ্র, ক্ষুধার্ত, যাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না, রোগের চিকিৎসা পেতো না, শিক্ষা পেতো না; সেই মানুষগুলোর ভাগ্য পরিবর্তনের কথাই তিনি চিন্তা করেছেন। শুধু বাংলাদেশে না, সারা বিশ্বের দরিদ্র, নিপীড়িত মানুষের কথা আন্তর্জাতিক যেকোনও জায়গায় তিনি বলেছেন। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়—এই পররাষ্ট্রনীতিতে তিনি বিশ্বাস করতেন।’

পঁচাত্তর পরবর্তী ২১ বছর সামরিক বাহিনীতে ১৯ বার ক্যু হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কত সামরিক কর্মকর্তা, জোয়ান, সৈনিক, সাধারণ মানুষকে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে। অনেক পরিবার এখনও তাদের লাশের সন্ধান কিংবা আপনজনের সন্ধানও পায়নি। এমন একটি অস্থিরতার মধ্যে ২১টি বছর কেটেছে।’

পঁচাত্তর পরবর্তী নির্বাসিত জীবনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যারা ক্ষমতা দখল করেছিল, তারা আমাদের দেশে আসতে দেয়নি। রিফিউজি হিসাবে বিদেশে থাকতে হয়েছে। এমনকি নিজেদের পরিচয় পর্যন্ত আমরা দিতে পারিনি। কারণ যারা আশ্রয় দিয়েছিল, এটা তাদের ইচ্ছা ছিল।’

এ সময় ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আসার ঘটনা বর্ণনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যে জাতি বঙ্গবন্ধুর ডাকে অস্ত্র তুলে নিয়ে যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছে। সেই জাতি অন্ধকারে পড়ে থাকবে, কোনও উন্নতি হবে না, তাদের জীবন ধারণের উন্নতি হবে না; এটা তো হতে পারে না।’

বঙ্গবন্ধুর কন্যা বলেন, ‘আমাদের ফিরিয়ে আনতে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। বাংলাদেশকে জাতির পিতার আদর্শে গড়ে তুলতে হবে। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমি ফিরে এসেছিলাম।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘চারণের বেশে সারা বাংলাদেশ আমি ঘুরে বেড়াই। কোথায়, কী অবস্থায় মানুষ বসবাস করছে, তা দেখেছি। একটা সময় দেখেছি, দেশের মানুষের পরনের কাপড়াটাও পুরনো; যা বিদেশ থেকে আমদানি করে পরানো হতো। ঘর নেই, বাড়ি নেই, পেটে খাবার নেই, চিকিৎসা নেই, শিক্ষা নেই। তেমনি একটি অবস্থায় দেশের মানুষ ধুঁকে ধুঁকে মারা যেতো। হয়তো মুষ্টিমেয় লোক আর্থিক সুবিধা পেয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তিমিরেই ছিল।’

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি দেশের যেকোনও ক্রান্তিলগ্নে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা সর্বোচ্চ আত্মত্যাগে সদা প্রস্তুত থাকে। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসাবে নানা কার্যক্রম করেছে। দুর্যোগ মোকবিলার পাশাপাশি দেশের অবকাঠামো ও আর্থিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাসহ শান্তি প্রতিষ্ঠা ও নিশ্চিত কল্পে দক্ষতা ও নিষ্ঠার পরিচয় দিয়ে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।’

তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ বাংলাদেশকে ইতোমধ্যে উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে ঘোষণা করেছে। তাদের সাধারণ অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে এটা পাস হয়েছে। জাতির পিতা মাত্র সাড়ে তিন বছরে স্বল্পন্নোত দেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠা করে গিয়েছিলেন। আর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেলাম। উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে আমাদের দেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাবো। এখানে যেকোনও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য বাংলাদেশ সদা প্রস্তুত। আমরা অর্থনৈতিক উন্নয়নের বন্ধনে বিশ্বের প্রথম ৫টি দেশের মধ্যে স্থান করে নিয়েছি।’