• সোমবার ২৯ মে ২০২৩ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ১৫ ১৪৩০

  • || ০৮ জ্বিলকদ ১৪৪৪

আজকের পটুয়াখালী
ব্রেকিং:
শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশ আছে বলেই এগিয়ে যাচ্ছে দেশ: প্রধানম সংঘাত নয়, আলোচনায় সমাধান চাই: প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাপী শান্তিরক্ষা প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বাংলাদেশ শান্তিরক্ষা মিশনে অন্যতম শীর্ষ শান্তিরক্ষী পাঠানো দেশ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতির আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্ক উন্নয়নে বাংলাদেশ ও চীনের আরও মনোযোগী হওয়া উচিত: প্রধানমন্ত্রী পুলিশকে আরো জনবান্ধব হওয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে আমরা আর অশান্তি-সংঘাত চাই না, সবার উন্নতি চাই: শেখ হাসিনা শিল্পাচার্য জয়নুলের শিল্পকর্ম আগামী প্রজন্মকে সৃজনশীল কাজে অনুপ্রেরণা যোগাবে: রাষ্ট্রপতি এশিয়ার ‘আয়রন লেডি’ শেখ হাসিনা : দ্য ইকোনমিস্ট আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে: প্রধানমন্ত্রী কাতারের আমিরের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ কাতার সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী চোরাচালান বন্ধে বিজিবিকে আরও তৎপর হতে রাষ্ট্রপতির নির্দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়তে চায় কাতার ‘নেতৃত্বের উদাহরণ সৃষ্টি করুন, নিজেই পরিবর্তন আনুন’ ‘আন্দোলন সংগ্রামে বঙ্গবন্ধু ছিলেন শান্তির অন্বেষণে নিবেদিত’ বঙ্গবন্ধুর সমগ্র জীবন ছিল শান্তির সাধনায় উৎসর্গকৃত: রাষ্ট্রপতি জাতীয় অর্থনীতিতে শিল্পখাতের অবদান ক্রমেই জোরদার হচ্ছে

পদ হারানোর পর ষড়যন্ত্রে নামেন ড. ইউনূস

আজকের পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ২২ জুন ২০২২  

তদবির করেও গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ টেকাতে না পেরে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন থেকে বিশ্বব্যাংকে সরাতে ষড়যন্ত্র করেন ড. ইউনূস। তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গে যোগাযোগ এবং ক্লিনটন ফাউন্ডেশনে অর্থদানসহ সে সময়ের ইউনূসের তৎপরতা বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। গ্রামীণ ব্যাংকের পদ হারানোর পর পদ্মা সেতুবিরোধী ষড়যন্ত্রে নামেন ইউনূস, সফলও হন তিনি, জানান বিশ্লেষকরা।

১৯৮৪ সালে র‌্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কারের মাধ্যমে লাইমলাইটে আসেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বাড়তে থাকে সমাজের নানা স্তরের সঙ্গে তার সম্পর্ক। এর সুবাদে দেশে মোবাইল ফোন কোম্পানি প্রতিষ্ঠার ধারণার জনক ইকবাল জেড কাদিরের সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। ইকবাল কাদিরের আইডিয়া নিজের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সম্প্রসারণের জন্য ড.ইউনূস সহায়তা নেন ৯৬ মেয়াদের আওয়ামী লীগ সরকারের।

ইকবাল কাদিরের মস্তিস্কপ্রসূত ধারণা গ্রামীণ টেলিকমকে তৃণমূলে ছড়িয়ে দিতে নরওয়ের টেলিনরের বিনিয়োগ আনেন তিনি। এরপর দেশটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠে ইউনূসের। নোবেল পাওয়ার দুই বছরের মাথায় প্রতারণার অভিযোগে সেই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তিক্ততা বাড়ে তার, যা প্রচারিত হয় বিদেশি গণমাধ্যমে। কিন্তু সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় থাকায় ইউনূসের সেই খবর গুরুত্ব পায়নি দেশিয় কোনো গণমাধ্যমে। কেননা দেশি কিছু গণমাধ্যমগুলো তখন ব্যস্ত ছিল বিরাজনীতিকরণ প্রক্রিয়ায়।

২০০৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘নাগরিক শক্তি’ নামে দল গঠন করে নবম সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে চান ড. ইউনূস।

ওই সময় ইউনূস রয়টার্সকে জানান, রাজনীতির বাইরে থাকার আর কোনো পথ নেই। দলের সমর্থনে গ্রামপর্যায়ে কমিটি ও প্রচার চালানোর পরিকল্পনার কথাও জানান।

উইকিলিকসের ফাঁস হওয়া একটি তারবার্তা বলছে, রাজনৈতিক দল গঠনের অভিলাষে সে সময় কলকাতায় নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপরাষ্ট্রদূতের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি।

ড. ইউনূস এমন এক সময় রাজনীতি আসার ঘোষণা দেন যখন দেশের রাজনীতি থেকে দুই নেত্রীকে মাইনাস করার পরিকল্পনা করছে ওয়ান ইলেভেন সরকার। ঠিক তখনই সামরিক কর্তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্যোগ নেন তিনি।

ড. ইউনুসের রাজনীতিতে আসার ঘোষণা নিয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, হঠাৎ করে একজন ব্যক্তির রাজনীতিতে আসা ভয়ংকর হতে পারে এবং তার উদ্দেশ্য যথেষ্ট সন্দেহজনক।

যদিও বিএনপি ড. ইউনূসের রাজনীতিতে আসাকে স্বাগত জানাই। সে সময় দলটির আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ বলেছিলেন, ড. ইউনূসকে রাজনীতিতে স্বাগত জানায়, আমি তার সাফল্যকামনা করি। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি রাজনীতিতে না আসাই তার জন্য ভালো হবে।

শেখ হাসিনা-বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের পর রাজনীতির মাঠ খালি করে ড. ইউনূসকে প্রতিষ্ঠার চক্রান্ত শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি।

গ্রামীণ ব্যাংকের বেতনভুক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন ড.মুহাম্মদ ইউনূস। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে দাতাদের দেয়া অর্থ এক খাত থেকে অন্য খাতে সরিয়ে ফেলার। এ বিষয়ে নরওয়ের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে একটি তথ্যচিত্রও প্রচারিত হয়। এ ছাড়া আইন অনুযায়ী ৬০ বছর বয়সে পদ ছাড়ার কথা তার। কিন্তু বেআইনিভাবে ৭১ বছর পর্যন্ত এমডির দায়িত্ব পালন করেন তিনি। পরে বাংলাদেশ ব্যাংক তাকে অব্যহতি দিলে হাইকোর্টে যান ইউনূস। সেখানেও হেরে যান তিনি।

ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউ এইজের সে সময়ের এক রিপোর্টে বলা হয়, ড. ইউনূসকে অপসারণের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলে আমেরিকার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন এপ্রিল মাসে বাংলাদেশে আসার সিদ্ধান্ত পাল্টাতে পারে।

মার্কিন বার্তা সংস্থা এপির তথ্য বলছে, হিলারি ক্লিনটন পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে ড. ইউনূস তার সঙ্গে তিনবার দেখা করেছেন এবং কয়েকবার টেলিফোনে কথা বলেছেন। গ্রামীণ ব্যাংকের দায়িত্বে থাকতে হিলারির সাহায্য চেয়েছিলেন। হিলারি তাকে সাহায্য করার পন্থা খুঁজে বের করতে সহকারীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন। হিলারিকে খুশি করতে তার ফাউন্ডেশনে ২০ কোটি টাকা অনুদানও দেন ইউনূস।

ড. ইউনূসকাণ্ডের দুই মাস আগে পদ্মা সেতুতে অর্থায়নে ১২০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণচুক্তি করে বিশ্বব্যাংক। পদ হারানো ইউনূস ঋণচুক্তি বাতিলে শুরু করেন তদবির। মার্কিন দফতর থেকে আসতে থাকে চাপ।

আমেরিকা চায় ড. ইউনূসকে যেন নিজ গতিতে মর্যাদার সঙ্গে তার উত্তরাধিকারীর কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করার সুযোগ দেয়া হয়।

একপর্যায়ে দুর্নীতির কল্পিত অভিযোগ করতে থাকে বিশ্বব্যাংক। যদিও কোনো অভিযোগের সপক্ষে প্রমাণ দিতে পারেনি তারা। ২০১২ সালের জুনে এসে ঋণচুক্তি বাতিল করে বিশ্বব্যাংকসহ দাতা সংস্থাগুলো।

বিশ্লেষকরা বলছেন, গ্রামীণ ব্যাংকের পদ হারানোর পর পদ্মা সেতুবিরোধী ষড়যন্ত্রে নামেন ইউনূস। সফলও হন তিনি। তার কারণে ঋণচুক্তি বাতিল করে বিশ্বব্যাংক। ৭ বছর পিছিয়ে যায় পদ্মা সেতুর কাজ। অথচ বিশ্বব্যাংক ঋণচুক্তি বাতিল না করলে ২০১৫ সালে উদ্বোধন হতো স্বপ্নের পদ্মা সেতু।