• বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের পটুয়াখালী
ব্রেকিং:
স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী আ.লীগ ক্ষমতায় আসে জনগণকে দিতে, আর বিএনপি আসে নিতে: প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা রাষ্ট্রপতির দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিশোর অপরাধীদের মোকাবেলায় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ব্রাজিলকে সরাসরি তৈরি পোশাক নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর জুলাইয়ে ব্রাজিল সফর করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী আদর্শ নাগরিক গড়তে প্রশংসনীয় কাজ করেছে স্কাউটস: প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় স্কাউট আন্দোলনকে বেগবান করার আহ্বান

বাংলাদেশের আদি ফসল ঢেমশি: পুষ্টিগুণে ভাতের বিকল্প

আজকের পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ১১ এপ্রিল ২০২২  

বাংলাদেশের কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী সরিষার মতো দেখতে ঢেমশি এ অঞ্চলেরই আদি ফসলগুলোর একটি যা এক সময় এ ভূ-খণ্ডে বেশ জনপ্রিয়ও ছিল।

বাংলাদেশ অর্গানিক প্রডাক্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুহাম্মদ আব্দুস ছালাম বলেছেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে পঞ্চগড়ে ঢেমশির চাষাবাদ করছেন। এটি চাষ খুবই সহজ এবং খরচও খুব কম। জমি চাষ করে বীজ বুনলেই ফসল পাওয়া যায়। খুব বেশি অর্থ ব্যয়ের প্রয়োজন হয় না।

কৃষিবিদ ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম কৃষি তথ্য সার্ভিসের ওয়েবসাইটে ঢেমশি নিয়ে তার লেখায় এটিকে বহুমাত্রিক ফসল হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

ঢেমশি কিভাবে খাওয়া যায়
ঢেমশি মূলত একটি শীতকালীন ফসল যার ইংরেজি নাম বাকহুইট। গমের নামের সাথে মিল থাকলেও এটি গম জাতীয় নয়। তবে সরিষার মিল আছে অর্থাৎ খৈলজাতীয়।

আব্দুস ছালাম জানিয়েছেন, এটি তিন কোনা দানা। ভাত হিসেবেও খাওয়া যায় আবার আটা করে রুটি হিসেবেও খাওয়া যায়।

তিনি জানান, বিশ্বের সবচেয়ে দামী মধু ঢেমশির ফুল থেকেই উৎপাদন হয়। একই ধরণের তথ্য আছে কৃষি তথ্য সার্ভিসের ওয়েবসাইটেও।

ড. জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, ষাটের দশক শুরু হয়ে নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জেলায় ঢেমশি চাষ হলেও পরবর্তীতে তা ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়। এখন আবার উত্তরবঙ্গে ঢেমশির আবাদ হচ্ছে। এটি দিন দিন আরো জনপ্রিয় হওয়ায় চাষের পরিসরও বাড়ছে।

তবে আব্দুস ছালাম বলছেন, সরকারিভাবে সহায়তা না পাওয়ার কারণে এ ফসলটির ক্ষেত্রে এখন খুব বেশি অগ্রসর হওয়া যাচ্ছে না। আর সঠিক নীতি সহায়তা না থাকা যারা চাষ করছেন তারাও বাজারে প্রত্যাশিত দাম পান না।

‘এটিকে মাঠে আবার নিয়ে আসতে সরকারের সহযোগিতা দরকার। এটি এলে জনপুষ্টির ক্ষেত্রে বিরাট অগ্রগতি হবে।’

ঢেমশির নানা উপকারিতা
কৃষিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম লিখেছেন, ঢেমশি ঠিক ভাতের মতোই তবে পুষ্টিগুণ ভাতের চেয়ে অনেক বেশি।

শর্করা কম থাকায় আর ফাইবার বেশি থাকায় এটি রক্তে সুগারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে।

এছাড়া প্রাকৃতিকভাবেই এতে বেশি পরিমাণ আমিষ, ক্যালসিয়াম, জিংকসহ নানা উপাদান আছে বলে শিশু স্বাস্থ্যের জন্য দারুণ উপকারী।

মূলত ভাত, মাছ, রুটি, দুধ, ডিম, সবজি ও ফলের প্রায় সব পুষ্টি উপাদান থাকার পাশাপাশি ঢেমশিতে আছে ভিটামিন, খনিজ, অ্যামাইনো এসিড ও ইলেকট্রলাইটস।

এছাড়া আরো কয়েকটি ক্ষেত্রে এটি ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। এগুলো হলো-

•বেশি আমিষের কারণে গর্ভবতী মা ও শিশুর মায়ের জন্য উপকারী

• হাঁড়ক্ষয় রোধ করে

• বিভিন্ন প্রকার ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে

• শিশুর হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করে

• এর আঁশ কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে ভূমিকা রাখতে পারে

ঢেমশি স্বল্প জীবনকালের একটি বিশেষ ফসল। বছরের যে সময়ে জমি পতিত থাকে বা ধান আবাদ করা সম্ভব হয় না সেসব জমিতে সাথী ফসল হিসেবেও ঢেমশি আবাদ করা যায়। আবার যেখানে ফসল হয় না সেখানেও এটি সহজে চাষাবাদ করা সম্ভব বলে বলছে কৃষি বিভাগ।

এর জন্য একদিকে যেমন রাসায়নিক সার দরকার হয় না তেমনি পোকামাকড় খুব একটা আক্রমণ করে না বলে বালাইনাশকেরও খুব একটা প্রয়োজন পড়ে না।

চর এলাকা মাটি এবং বেলে দোআঁশ মাটিতে ভালো আবাদ হয় এর এবং নিজেই আগাছা নষ্ট করে বলে আলাদা করে আগাছা দমন করতে হয় না ঢেমশির জন্য।

ঢেমশির বীজ বপনের সময় হলো কার্তিক অগ্রহায়ণ মাস এবং জৈবসার ব্যবহার করলে ফলন কিছুটা ভালো হতে পারে।

প্রতি একর জমিতে চাষের জন্য বার কেজি বীজের দরকার হয় এবং সাধারণত একর প্রতি এক টন পর্যন্ত উৎপাদন হতে পারে।

আবার একই সময়ে এর ফুল থেকে মধু উৎপাদন সম্ভব এবং সেক্ষেত্রে প্রায় ১২০ কেজি পর্যন্ত মধু প্রতি একরে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ফুল আসার আগ পর্যন্ত ঢেমশি পুষ্টিকর শাক হিসেবেও খাওয়া যায়।

বাংলাদেশে এর সম্ভাবনা
ড. জাহাঙ্গীর আলম বাংলাদেশে এর ব্যাপক সম্ভাবনার কথা বললেও আব্দুস ছালাম বলছেন সরকারের তরফ থেকে দৃষ্টি না দিলে আপাতত এর ভবিষ্যৎ নেই।

তিনি বলেন, সার কীটনাশক লাগে না বলে এর প্রতি নীতিনির্ধারকদের আগ্রহ কম থাকে। আর এদেশে খাদ্যের ক্ষেত্রে পুষ্টির বিষয়টি গুরুত্ব পায় না। ফলে ঢেমশির মতো ফসলের দিকেও কর্তৃপক্ষের আগ্রহ কম।

ড. জাহাঙ্গীর আলম অবশ্য দাবি করেছেন, ঢেমশি চাল, আটা এবং মধু বিদেশে রফতানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব।

তিনি লিখেছেন, ঢেমশিই পারে এ দেশের মানুষের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করতে এবং খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা এবং অতি সহজে নিরাপদ খাদ্য প্রতিষ্ঠা করতে ।