• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের পটুয়াখালী
ব্রেকিং:
যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

মানুষ আল্লাহর প্রিয় ও অপ্রিয় হয় কেন?

আজকের পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ২১ জুন ২০২২  

আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পূর্বশর্ত হলো তাঁকে ভালোবাসা। আর আল্লাহর অবাধ্য কাজ করলেই বান্দা তার অপ্রিয় হয়ে যায়। তাই যে আল্লাহকে ভালোবাসে আল্লাহ তাআলাও তাকে ভালোবাসেন। আর যে বান্দা আল্লাহর অপ্রিয় হয়ে যায়, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি ঘৃণা পোষণ করে। আল্লাহর ভালোবাসার প্রভাব যেমন অকৃত্রিম হয় আবার তার ঘৃণার প্রভাবও কঠিন আকারে বিস্তৃতি লাভ করে। দুনিয়াতে সে হয় অপমানিত ও লাঞ্ছিত।

আল্লাহ তাআলা কোরআন-সুন্নার একাধিক ঘোষণায়ে এ বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন। যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলাকে ভালোবাসে আল্লাহ তাআলাও তাকে ভালোবাসে। নবিজীর নির্দেশনা থেকে জানা যায়, আল্লাহর ভালোবাসার মাধ্যমেই মানুষ দুনিয়াতে জনপ্রিয়তার শীর্ষে আরোহন করে। আর তার বিরাগভাজন হলে দুনিয়াতে সে লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়।

তাই সব সময় আল্লাহ তাআলাকে ভালোবাসার চেষ্টায় নিজেদের নিয়োজিত রাখা জরুরি। কোরআন ও সুন্নাহর ভিত্তিতে আল্লাহ তাআলাকে ভালোবাসার পাশাপাশি আল্লাহর ভালোবাসা পেতে তারই দিকনির্দেশনা মেনে চলার সর্বাত্মক চেষ্টা করা। আল্লাহ তাআলা তাঁর নবিকে উদ্দেশ্য করে কোরআনে পাকে ঘোষণা করেন-

قُلۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تُحِبُّوۡنَ اللّٰهَ فَاتَّبِعُوۡنِیۡ یُحۡبِبۡکُمُ اللّٰهُ وَ یَغۡفِرۡ لَکُمۡ ذُنُوۡبَکُمۡ ؕ وَ اللّٰهُ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ

‘(হে রাসুল!) আপনি বলুন, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালোবাসতে চাও; তাহলে আমার (প্রিয়নবির) অনুসরণ কর। ফলে আল্লাহ তোমাদেরকে ভালোবাসবেন এবং তোমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা করবেন। মূলত আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ৩১)

এ ঘোষণা প্রমাণ করে যে, মৌখিক দাবির মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন করতে পারবে না। আল্লাহ তাআলার প্রিয় হতে পারবে না। এর জন্য প্রয়োজন হলো- অবশ্যিকভাবে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আনুগত্য করা। তবেই বান্দা মহান রবের প্রিয় হতে পারবে। ভালোবাসা পেয়ে ধন্য হবে।

আল্লাহ যে বান্দাকে ভালোবাসেন সে সংবাদ তিনি ফেরেশতাদের মাধ্যমে সারা জাহানে জানিয়ে দেন। দুনিয়াতে তাকে জনপ্রিয় করে তোলেন। এরপর আল্লাহ তাআলা তার প্রিয় বান্দাকে ক্ষমা করে দেন। যখন কোনো মানুষ আল্লাহর ভালোবাস পেয়ে ক্ষমাপ্রাপ্ত হন; তখনই মানুষ আল্লাহর সন্তুষ্টি পেয়ে ধন্য হন।

মানুষকে ভালোবাসা ও ঘৃণার নির্দেশ

আল্লাহর ভালোবাসায় মানুষ দুনিয়াতে জনপ্রিয়তা লাভ করে। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে পাকে সে বর্ণনা দিয়েছেন এভাবে-

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ যখন কোনো ব্যক্তিকে ভালোবাসেন, তখন জিবরিলকে ডেকে বলেন, আমি অমুক ব্যক্তিকে ভালোবাসি, সুতরাং তুমিও তাকে ভালোবাস।

এরপর জিবরিল আলাইহিস সালাম তাকে ভালোবাসতে থাকেন। তারপর (জিবরিল) আকাশবাসীকে (ফেরেশতাদের) বলে দেন যে, আল্লাহ অমুক ব্যক্তিকে ভালোবাসেন। অতএব তোমরা তাকে ভালোবাস। তখন আকাশের সকল ফেরেশতা তাকে ভালোবাসতে থাকেন। অতঃপর সে ব্যক্তির জন্য জমিনেও জনপ্রিয়তা দান করা হয়।

আর আল্লাহ যখন কোনো বান্দাকে ঘৃণা করেন তখন জিবরিলকে ডেকে বলেন, আমি অমুক ব্যক্তিকে ঘৃণা করি, তুমিও তাকে ঘৃণা কর। তখন জিবরিলও তাকে ঘৃণা করেন। এরপর আকাশবাসীকে বলে দেন যে, আল্লাহ অমুক ব্যক্তিকে ঘৃণা করেন, তোমরাও তাকে ঘৃণা কর। তখন আকাশবাসীরা তাকে ঘৃণা করতে থাকে। অতঃপর তার জন্য জমিনেও মানুষের মনে ঘৃণা সৃষ্টি হয়।’ (মুসলিম, মিশকাত)

সুতরাং হাদিসের এ ঘোষণা থেকে বুঝা যায়, আল্লাহ যাকে প্রিয় করে নেন, আসমান ও জমিনবাসী তাকে প্রিয় করে নেন। আর যাকে কর্মের কারণে ঘৃণা করেন, আসমান ও জমিনবাসীর কাছেও অপ্রিয় ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত হয়ে যায়।

প্রশ্ন আসে! মানুষকে ভালোবাসার নিদর্শন কী? মহান আল্লাহ তাআলাকে মানুষ কি পরিমাণ ভালোবাসেন?

মহান আল্লাহ তিনি; যিনি মানুষকে কোনো কিছু চাওয়ার আগে অসংখ্য কল্যাণকর জিনিস দান করেছেন; যা আল্লাহ ছাড়া দুনিয়ার কেউ তা কাউকে দান করতে পারে না।

তিনিই তো সেই আল্লাহ; যিনি মানুষকে সুনিপুন কারিগরি শৈলিতে সৃষ্টি করেছেন। মায়ের পেটে অন্ধকারের মধ্যে সুরক্ষিত রেখেছেন এবং সুন্দর আকার দান করেছেন।

বুঝার জন্য দিয়েছেন উন্নত মেমোরি তথা মস্তিষ্ক। পৃথিবীর সৌন্দর্য দেখতে দিয়েছে দু’টি চোখ। শোনার জন্য দিয়েছেন দু’টি কান। কথা বলার জন্য দিয়েছেন জবান। খাওয়ার জন্য দিয়েছেন দাঁত। স্বাদ গ্রহণের জন্য দিয়েছেন অটোমেটিক মেশিন জিহ্বা। নিশ্বাস গ্রহণের জন্য দিয়েছেন অতন্দ্র প্রহরী নাক।

চলাচলের জন্য দিয়েছেন সচল মেশিন দু’টি পা। আর অনবরত হালাল রিজিক লাভে দিয়েছেন দু’টি হাত। অবশেষে মানুষকে করেছেন সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত মানুষ। এ সবাই বান্দাকে মহান আল্লাহ তাআলার ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ।

সর্বোপরি কথা হলো

যারা এ সব নেয়ামত লাভের পরও মহান আল্লাহকে ভালোবাসতে পারেনি তাদের জন্য রয়েছে অশুভ পরিণতি। আল্লাহ তাআলা সে কথাও কোরআনে পাকে ঘোষণা করেছেন-

وَ لَقَدۡ ذَرَاۡنَا لِجَهَنَّمَ کَثِیۡرًا مِّنَ الۡجِنِّ وَ الۡاِنۡسِ ۫ۖ لَهُمۡ قُلُوۡبٌ لَّا یَفۡقَهُوۡنَ بِهَا ۫ وَ لَهُمۡ اَعۡیُنٌ لَّا یُبۡصِرُوۡنَ بِهَا ۫ وَ لَهُمۡ اٰذَانٌ لَّا یَسۡمَعُوۡنَ بِهَا ؕ اُولٰٓئِکَ کَالۡاَنۡعَامِ بَلۡ هُمۡ اَضَلُّ ؕ اُولٰٓئِکَ هُمُ الۡغٰفِلُوۡنَ

‘আর আমি তো বহু জ্বিন ও মানুষকে জাহান্নামের জন্য সৃষ্টি করেছি; যাদের কলব বা অন্তর আছে কিন্তু তা দিয়ে তারা উপলব্ধি করে না; তাদের চোখ আছে কিন্তু তা দিয়ে তারা দেখে না; তাদের কান আছে; এ কান দিয়ে তারা শোনে না। এরা চার পা বিশিষ্ট জন্তুর মতো; বরং তার চেয়েও নিকৃষ্ট বিভ্রান্ত। তারাই হলো উদাসিন।’ (সুরা আরাফ : আয়াত ১৭৯)

সুতরাং মানুষের উচিত, আল্লাহ তাআলার দান করা জ্ঞান ও শারীরিক অঙ্গ দ্বারা নিজেদেরকে নিয়ে চিন্তা গবেষণা করার মাধ্যমে মহান আল্লাহর কুদরত ও নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা। আল্লাহ তাআলার বিধানের প্রতি গুরুত্বারোপ করে তার প্রিয় হওয়ার চেষ্টা করা। তার কাছে অপ্রিয় হওয়া থেকে বেঁচে থাকা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে আল্লাহ ও তার রাসুলের বিধি-বিধানের প্রতি গুরুত্বারোপ করে তাদের প্রিয় হওয়ার তাওফিক দান করুন। তাদের অপ্রিয় হতে বেঁচে থাকতে যথাযথ আমল-ইবাদত করার তাওফিক দান করুন। দুনিয়া ও আখেরাতে নিজেদেরকে আল্লাহ এবং তার রাসুলের কাছে জনপ্রিয় হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।