• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের পটুয়াখালী
ব্রেকিং:
যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

ইহরাম অবস্থায় হজ পালনকারীদের যেসব কাজ নিষিদ্ধ

আজকের পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ২৯ মে ২০২৩  

হজ কিংবা ওমরাহর ইহরাম অবস্থায় হজ পালনকারীদের জন্য বেশ কিছু কাজ নিষিদ্ধ। নিষিদ্ধ কাজগুলো তিনভাগে বিভক্ত। তাহলো-

১. এমন কিছু কাজ যা নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য হারাম।

২. এমন কিছু কাজ যা শুধু পুরুষের জন্য হারাম।

৩. এমন কিছু কাজ যা শুধু নারীর জন্য হারাম।

নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য হারাম কাজ সাতটি। তাহলো-

১. মাথার চুল মুণ্ডন করা বা ছোট করা কিংবা উঠিয়ে ফেলা। আল্লাহ বলেন-

وَلاَ تَحْلِقُواْ رُؤُوسَكُمْ حَتَّى يَبْلُغَ الْهَدْيُ مَحِلَّهُ

‘আর কোরবানি যথাস্থানে না পৌঁছা পর্যন্ত নিজেদের মস্তক মুণ্ডন করো না।[1]

ইসলামিক স্কলারগণ শরীরের সব চুলকে মাথার চুলের ওপর কেয়াস করেছেন। তাই ইহরাম অবস্থায় থাকা ব্যক্তির জন্য শরীরের কোনো চুল দূর করা জায়েয নয়।

২. ইহরামের অবস্থায় নখ কাটা বা নখ উঠিয়ে ফেলা। এ বিষয়টিকেও ওলামায়ে কেরামগণ মাথা মুণ্ডনের উপর কেয়াস করেছেন। তবে যদি কোনো একটি নখ ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে কষ্ট অনুভব হয় তাহলে কষ্টদায়ক অংশটুকু কেটে ফেলে দিলে কোনো অসুবিধা নেই এবং তাতে কোনো ফিদইয়াও লাগবে না।

৩. ইহরাম করার পর ইহরামের কাপড়ে কিংবা শরীরে অথবা এমন কিছুতে যা শরীরের সঙ্গে লেগে থাকে তাতে সুগন্ধি ব্যবহার করা। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুহরিম (ইহরামকারী ব্যক্তি) সম্পর্কে বলেন-

لَا يَلْبَسُ الْمُحْرِمُ الْقَمِيصَ وَلَا الْعِمَامَةَ وَلَا السَّرَاوِيلَ وَلَا الْبُرْنُسَ وَلَا ثَوْبًا مَسَّهُ زَعْفَرَانٌ وَلَا وَرْسٌ

‘মুহরিম ব্যক্তি জামা, পাগড়ি, পাজামা, বুরনুস (মাথা ঢাকা জামা) পরিধান করবে না এবং এমন কাপড় যাতে জাফরান বা ওয়ার্স নামক সুগন্ধিযুক্ত ঘাস স্পর্শ করেছে।’ (বুখারি ৫৭৯৪, মুসলিম ১১১৭)

৪. নিজের অথবা অপরের বিবাহ বন্ধন করা। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

لَا يَنْكِحُ الْمُحْرِمُ وَلَا يُنْكِحُ وَلَا يَخْطُبُ

‘মুহরিম ব্যক্তি (ইহরাম অবস্থায়) নিজে বিবাহ করবে না, কোন মেয়ের অভিভাবক বা উকিল হয়ে বিবাহও দেবে না এবং বিবাহের প্রস্তাবও দেবে না।’ (মুসলিম ১৪০৯)

৫. যৌন কামনার সঙ্গে চুম্বন দেওয়া, স্পর্শ করা কিংবা জড়িয়ে ধরা। মহান আল্লাহ বলেন-

الْحَجُّ أَشْهُرٌ مَّعْلُومَاتٌ فَمَن فَرَضَ فِيهِنَّ الْحَجَّ فَلاَ رَفَثَ وَلاَ فُسُوقَ وَلاَ جِدَالَ فِي الْحَجِّ

হজ হয় কয়েকটি নির্দিষ্ট মাসে, এরপর এ মাসগুলোতে যে কেউ হজ করার মনস্থ করবে, তার জন্য হজের মধ্যে স্ত্রী সম্ভোগ, অন্যায় আচরণ ও ঝগড়া-বিবাদ বৈধ নয়।’ (সুরা বাকারা: আয়াত ১৯৭)

এ আয়াতে ‘রাফাস’ (স্ত্রী সম্ভোগ)-এর অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে, সহবাস ও তার পূর্ব কার্যাবলী। যেমন- চুম্বন দেওয়া, খোঁচা দেয়া, কামভাব নিয়ে রসিকতা করা।

৬. সহবাস করা। আর স্বামী-স্ত্রী মিলন হচ্ছে হজ ও ওমরা অবস্থায় সর্বাধিক বড় নিষিদ্ধ কাজ। মহান আল্লাহ বলেন-

فَمَن فَرَضَ فِيهِنَّ الْحَجَّ فَلاَ رَفَثَ وَلاَ فُسُوقَ وَلاَ جِدَالَ فِي الْحَجِّ

‘এরপর এ মাসগুলোতে যে কেউ হজ করার মনস্থ করবে, তার জন্য হজের মধ্যে স্ত্রী সম্ভোগ, অন্যায় আচরণ ও ঝগড়া-বিবাদ বৈধ নয়।’ (সুরা বাকারা: আয়াত ১৯৭)

৭. শিকার করা। এটি হজর ও ওমরার ইহরামের অবস্থায় ব্যক্তিদের নিষিদ্ধ কাজ। আল্লাহ তাআলা বলেন-يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ لاَ تَقْتُلُواْ الصَّيْدَ وَأَنتُمْ حُرُمٌ

‘ওহে বিশ্বাসীগণ! ইহরাম অবস্থায় তোমরা শিকারকে হত্যা করো না।’ (সুরা বাকারা: আয়াত ৯৫)

ইহরাম অবস্থায় শুধু পুরুষদের জন্য হারাম

এমন দুটি বিষয় রয়েছে যা ইহরাম অবস্থায় শুধু পুরুষ হজ পালনকারীদের জন্য হারাম। তাহলো-

১. মাথা ঢাকা। হাদিসে পাকে এসেছে-

اغْسِلُوهُ بِمَاءٍ وَسِدْرٍ وَكَفِّنُوهُ فِي ثَوْبَيْهِ وَلَا تُخَمِّرُوا رَأْسَهُ

‘তোমরা তাকে পানি ও কুল পাতা দ্বারা গোসল দাও ও তাকে তার (ইহরামের) দুটো কাপড়েই কাফন দাও এবং তার মাথা ঢাকিও না।’ (বুখারি ১২৬৫, মুসলিম ১২০৬)

কোন পুরুষ ব্যক্তির জন্য ইহরাম অবস্থায় এমন কিছু দ্বারা মাথা ঢাকা জায়েয নয়, যা মাথার সাথে লেগে থাকে, যেমন পাগড়ী, বিভিন্ন প্রকারের টুপী ও রূমাল ইত্যাদি। তবে এমন কিছু দ্বারা মাথা ঢাকা যায়, যা মাথার সাথে লেগে থাকে না; তাতে কোন অসুবিধা নেই। যেমন- ছাতা, গাড়ীর ছাদ ও তাঁবু ইত্যাদি।

২. ইহরাম অবস্থায় সেলাই করা কাপড় পরা

পুরুষদের জন্য ইহরাম অবস্থায় সেলাই করা কাপড় পড়া যাবে না। ইহা বিশেষ করে পুরুষদের জন্য হারাম। আর সেলাইকৃত কাপড়ের অর্থ হল, এমন কাপড় যা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের গঠনে তৈরি করা হয়। তা পুরো শরীরেই থাক, যেমন মাথা ঢাকা জুববা এবং আরবি জুববা কিংবা শরীরের কিছু অংশেই তা হোক, যেমন- পাজামা, প্যান্ট, গেঞ্জি, আণ্ডার ওয়্যার, চামড়ার মোজা, কাপড় মোজা, হাত বা পায়ের মোজা। হাদিসে পাকে এসেছে-

لَا يَلْبَسُ الْقَمِيصَ وَلَا الْعِمَامَةَ وَلَا السَّرَاوِيلَ وَلَا الْبُرْنُسَ وَلَا الْخِفَافَ وَلَا ثَوْبًا مَسَّهُ الْوَرْسُ أَوْ الزَّعْفَرَانُ

(ইহরাম অবস্থায়) জামা, পাগড়ি, পাজামা-প্যান্ট এবং মাথা ঢাকা জুববা পরা যাবে না। আর এমন কাপড় পরা যাবে না; যাকে ওয়ার্স নামক ঘাসের বা জাফরানের সুগন্ধী স্পর্শ করেছে।’ (বুখারি ১৪৩, মুসলিম)

ইহরাম অবস্থায় শুধু নারীর জন্য হারাম

১. নারীরা অলঙ্কার ও সাজ-সজ্যা প্রকাশ করবে না।

২. হাত মোজা পরবে না।

৩. মুখমণ্ডলের উপর নিকাব (ফাটল বিশিষ্ট পর্দা) পরবে না এবং সামনে কাছে কোনো অপর পুরুষ না থাকলে মুখমণ্ডলও আবৃত করবে না।

তবে পুরুষ মানুষ সামনে পড়লে মুখমণ্ডল ওড়না লটকিয়ে ঢেকে নিবে। কারণ, অপর পুরুষদের সামনে নারীর চেহারা খোলা জায়েয নয়।