• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের পটুয়াখালী
ব্রেকিং:
যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

কিলোমিটারে রূপ নিচ্ছে পদ্মা সেতু

আজকের পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ৪ জানুয়ারি ২০১৯  

এখন পর্যন্ত বসেছে ৫টি স্প্যান। দেড় শ মিটার নিয়ে একটি একটি করে পাঁচটি স্প্যান বসে একটু একটু করে দীর্ঘ হচ্ছিল পদ্মা সেতু। পাঁচ স্প্যানের দৈর্ঘ্য হয় ৭৫০ মিটার। এবার ষষ্ঠ স্প্যান বসতে যাচ্ছে প্রমত্তা এই নদীর ওপর। আগামী ফেব্রুয়ারিতে আরও একটি স্প্যান বসে যেতে পারে। পরপর দুই মাসে দুটি স্প্যান বসার পর পদ্মা সেতুর এক কিলোমিটারের বেশি অংশ দৃশ্যমান হবে। 

পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ষষ্ঠ স্প্যানটি জাজিরা প্রান্তে বসানো হবে। এ ছাড়া মাওয়া প্রান্তে স্প্যান স্থাপনের কাজ চলছে।

পদ্মা সেতু প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডের সামনে ষষ্ঠ ও সপ্তম স্প্যান দুটি প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। ষষ্ঠ স্প্যানটি বসানো হবে সেতুর ৩৭ ও ৩৬ নম্বর পিলারের (খুঁটি) ওপর। আর সপ্তম স্প্যানটি ৩৬ ও ৩৫ পিলার দুটিতে বসানো হবে।

কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে আরও স্প্যান প্রস্তুত করার কাজ বেশ দ্রুত চলছে বলে জানান পদ্মা সেতু প্রকল্পের এক প্রকৌশলী। তিনি বলেন, কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে আরও পাঁচটি স্প্যানের ৯০ শতাংশ প্রস্তুতের কাজ শেষ হয়েছে। এ মাসের মধ্যে এসব স্প্যান প্রস্তুত হয়ে যাবে। এই স্প্যানগুলো আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বসানো হবে। তবে আপাতত জাজিরা প্রান্ত থেকে স্প্যান বসানোর কাজ চলবে। ৬ ও ৭ নম্বর পিলার নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ার মাওয়া প্রান্তে স্প্যান আপাতত বসানো হচ্ছে না। এই দুটি পিলারের কাজ শেষ হলে মাওয়ায় স্প্যান বসানো শুরু হবে। তবে মাঝ নদীতে ১২ ও ১৩ নম্বর পিলার দুটি প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে।

২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যানটি বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি ৩৮ ও ৩৯ নম্বর খুঁটিতে বসানো হয় দ্বিতীয় স্প্যান। গত বছরের ১১ মার্চ ৩৯ ও ৪০ নম্বর খুঁটির ওপর বসে তৃতীয় স্প্যান। ১৩ মে ৪০ ও ৪১ নম্বর খুঁটির ওপর চতুর্থ স্প্যান বসানো হয়। সবশেষ ২৯ জুন সেতুর পঞ্চম স্প্যান বসানো হয়েছে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা এলাকায়। জাজিরা প্রান্তের তীরের দিকের এটিই শেষ স্প্যান। এর মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর ৭৫০ মিটার দৃশ্যমান হয়।

দ্বিতল পদ্মা সেতু হচ্ছে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরার মধ্যে। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য (পানির অংশের) ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। ডাঙার অংশ ধরলে সেতুটি প্রায় নয় কিলোমিটার দীর্ঘ হবে। খুঁটির ওপর ইস্পাতের যে স্প্যান বসানো হবে, এর ভেতর দিয়ে চলবে ট্রেন। আর ওপর দিয়ে চলবে যানবাহন। পুরো সেতুতে মোট পিলারের সংখ্যা ৪২টি। প্রতিটি পিলারের রাখা হয়েছিল ছয়টি পাইল। একটি থেকে আরেকটি পিলারের দূরত্ব ১৫০ মিটার। এই দূরত্বের লম্বা ইস্পাতের কাঠামো বা স্প্যান জোড়া দিয়েই সেতু নির্মিত হবে। ৪২টি খুঁটির ওপর এ রকম ৪১টি স্প্যান বসানো হবে। এর মধ্যে ৩টি স্প্যান বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। স্প্যানের অংশগুলো চীন থেকে তৈরি করে সমুদ্রপথে জাহাজে করে আনা হয় বাংলাদেশে। ফিটিং করা হয় মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে। তবে কাদামাটির পরই শক্ত মাটি না পাওয়ায় পদ্মা সেতুর ১৪টি পিলারের মধ্যে ১টি করে পাইলের সংখ্যা বাড়ানো হয়।

স্প্যানের মতো পিলার নির্মাণের কাজও বেশ দ্রুত চলছে। পদ্মা সেতু প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, মূল নদীতে ৪০টি পিলার রয়েছে। এর মধ্যে ১৫টি পিলারের নির্মাণকাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। ১৪টি পিলারের কাজ আগামী মার্চ মাসের শেষে সম্পন্ন হয়ে যেতে পারে। বাকি ১১টি পিলারের পাইল ড্রাইভের কাজ চলছে।

পিলার ও স্প্যানের পাশাপাশি সেতুতে রেলপথের জন্য স্ল্যাব বসানোর কাজ চলছে। দুটি রেলওয়ের স্ল্যাব বসানো হয়ে গেছে। এ মাসেই শুরু হবে ২২ মিটার প্রস্থের রোডওয়ে স্ল্যাব বসানোর কাজ। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত পদ্মা সেতুর পুরো প্রকল্পের ৬২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে মূল সেতুর কাজ হয়েছে ৭২ শতাংশ। এ ছাড়া নদী শাসনের কাজ হয়েছে ৪৮ শতাংশ।

বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু প্রকল্পটির যাত্রা শুরু হয় ২০০৭ সালে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ওই বছরের ২৮ আগস্ট ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করেছিল। পরে আওয়ামী লীগ সরকার এসে রেলপথ সংযুক্ত করে ২০১১ সালের ১১ জানুয়ারি প্রথম দফায় সেতুর ব্যয় সংশোধন করে। বর্তমান ব্যয় ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি। মূল সেতু নির্মাণে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি। আর নদীশাসনের কাজ করছে চীনের আরেক প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো করপোরেশন। দুই প্রান্তে টোল প্লাজা, সংযোগ সড়ক, অবকাঠামো নির্মাণ করছে দেশীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।