• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের পটুয়াখালী
ব্রেকিং:
থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

প্রশিক্ষণ ও সরকারি আর্থিক সহায়তা বদলে দিয়েছে হিজড়াদের জীবনমান

আজকের পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ২২ নভেম্বর ২০১৮  


নিজস্ব প্রতিবেদক :
 হিজড়া জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের  মোট জনসংখ্যার একটি ক্ষুদ্র অংশ হলেও আবহমান কাল থেকে এ জনগোষ্ঠী অবহেলিত ও অনগ্রসর গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত। সমাজে বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার এ জনগোষ্ঠীর পারিবারিক, আর্থসামাজিক, শিক্ষা ব্যবস্থা, বাসস্থান, স্বাস্থ্যগত উন্নয়ন এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ সর্বোপরি তাদেরকে সমাজের মূল স্রোতধারায় এনে দেশের সার্বিক উন্নয়নে তাদেরকে সম্পৃক্তকরণের লক্ষ্যে সরকার এ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সমাজসেবা অধিদফতরের জরিপমতে বাংলাদেশে হিজড়ার সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার।
২০১২-২০১৩ অর্থ বছর হতে পাইলট কর্মসূচি হিসেবে দেশের ৭টি জেলায় এ কর্মসূচি শুরু হয়। ৭টি জেলা হচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, পটুয়াখালী, খুলনা ,বগুড়া এবং সিলেট। ২০১২-১৩ অর্থ বছরে বরাদ্দ ছিল ৭২,১৭,০০০(বাহাত্তর লক্ষ সতের হাজার) টাকা। ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে নতুন ১৪ টি জেলাসহ মোট ২১টি জেলায় এ কর্মসূচি বাস্তবায়িত হয়েছে এবং জেলাগুলো হচ্ছে ঢাকা, গাজীপুর, নেত্রকোণা, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, চট্টগ্রাম, চাঁদপুর, লক্ষীপুর, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, কুমিল্লা, বগুড়া, জয়পুরহাট, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, খুলনা, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, দিনাজপুর, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, সিলেট। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৪,০৭,৩১,৬০০ (চার কোটি সাত লক্ষ একত্রিশ হাজার ছয়শত টাকা)। ২০১৪-২০১৫ অর্থ বছরের কর্মসূচির বরাদ্দ ৪,৫৮,৭২,০০০.০০ (চার কোটি আটান্ন লক্ষ বাহাত্তর হাজার) টাকা।২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ৬৪ জেলায় সম্প্রসারন করা হয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ৬৪ জেলায় বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ১১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা।
লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য : স্কুলগামী হিজড়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষিত করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ৪ স্তরে (জনপ্রতি মাসিক প্রাথমিক ৭০০, মাধ্যমিক ৮০০, উচ্চ মাধ্যমিক ১০০০ এবং উচ্চতর ১২০০ টাকা হারে) উপবৃত্তি প্রদান ; ৫০ বছর বা তদুর্ধ বয়সের অক্ষম ও অসচ্ছল হিজড়াদের বিশেষ ভাতা জনপ্রতি মাসিক ৬০০ প্রদান ; বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মক্ষম হিজড়া জনগোষ্ঠীর দক্ষতা বৃদ্ধি ও আয়বর্ধনমূলক  কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করে তাদের সমাজের মূল স্রোতধারায় আনয়ন ;  প্রশিক্ষণোত্তর আর্থিক সহায়তা ১০,০০০/-( দশ হাজার) টাকা প্রদান।
অপরদিকে হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে সরকারের আইসিটি বিভাগ তাদের তথ্যপ্রযুক্তি প্রশিক্ষণ দিয়েছে । প্রশিক্ষণ নিয়ে তারা পছন্দ ও যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ বেছে নিয়েছে। এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করায় হিজড়াদের জীবনের নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে ।
২০১৩ সালে সরকার হিজড়াদের ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় তাদের সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। ওই সময় ট্রাফিক পুলিশে তাদের চাকরি দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। 
দেশে হিজড়া জনগোষ্ঠীর সংখ্যা নিয়ে সঠিক কোনও পরিসংখ্যান নেই। সরকারি হিসাব অনুযায়ী (২০১২ সালের হিসাব) দেশে হিজড়ার সংখ্যা ১২ হাজারের মতো। এই বিশাল জনগোষ্ঠীর মধ্যে শিক্ষিত মাত্র ২ শতাংশের কিছু বেশি। এদের মধ্যে কেউ কেউ মাস্টার্স ডিগ্রিধারী। অনেকে বিভিন্ন পেশায় কর্মরত।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছিলেন, ‘আমরা হিজড়া সম্প্রদায়কে তথ্যপ্রযুক্তির প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের উন্নত জীবন উপহার দিয়েছি। তাদেরকে পেশাগত জীবনের মূল স্রোতে আনা হয়েছে। এ কাজের জন্য প্রথমে একটা ডাটাবেজ তৈরি করা  হয়। হিজড়াদের সংখ্যা কত, কোথায় কোথায় আছেন,কার শিক্ষাগত যোগ্যতা কী-ডাটাবেজ তৈরি হয়। তা দেখে তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যে প্রতিবন্ধীদের তথ্যপ্রযুক্তি প্রশিক্ষণ দেই, তাদের জন্য চাকরির মেলার আয়োজন করি―প্রয়োজনে সেখান থেকে বাজেট সাশ্রয় করে আমরা হিজড়াদের তথ্যপ্রযুক্তি প্রশিক্ষণ দিয়েছি। 
সংশ্লিষ্টরা জানান, সংশ্লিষ্ট এলাকার হিজড়াদের সেখানে থাকা শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এর আগে সারাদেশের ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউডিসি) ও শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের মাধ্যমে হিজড়াদের ডাটাবেজ তৈরি করা হয়েছে।     
হিজড়াদের সংগঠন বাংলাদেশ হিজড়া কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ড. মু. জানে আলম  রাবিদ জানান, তথ্যপ্রযুক্তি প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি তাদের মনোজগতে পরিবর্তন আনতে হবে। তাদের বোঝাতে হবে ‘হিজড়া ক্যারিয়ার’ এর চেয়ে তাদের আরও ভালো ক্যারিয়ার দেওয়া হবে।

কারণ,হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, ‘হিজড়ারা মনে করেন, তাদের হিজড়া ক্যারিয়ার অনেক ভালো। নগদ আয়  হয় বলে তারা এই পেশায় থাকতে চায়। এই ধারণা বদলে দিয়ে তাদের তথ্যপ্রযুক্তি প্রশিক্ষণ দিলে ভালো হবে।’

তার মতে, ‘হিজড়াদের ধী শক্তি (ব্রেইন) খুবই প্রখর,শারীরিক সক্ষমতাও যে কোনও পুরুষ বা নারীর তুলনায় অনেক বেশি। প্রচুর পরিশ্রম করতে পারে তারা। ফলে তাদের জন্য বিশেষায়িত কাজ খুঁজে বের করতে হবে।’