• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের পটুয়াখালী
ব্রেকিং:
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী আ.লীগ ক্ষমতায় আসে জনগণকে দিতে, আর বিএনপি আসে নিতে: প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা রাষ্ট্রপতির দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিশোর অপরাধীদের মোকাবেলায় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ব্রাজিলকে সরাসরি তৈরি পোশাক নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

যে ছবিগুলো কিং খান বানিয়েছে শাকিবকে

আজকের পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ৪ এপ্রিল ২০১৯  

শাকিব খান। তাকে নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। আর তাকে ওইভাবে উপস্থাপন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার মতও কিছুই নেই। দীর্ঘ সময় ধরে ঢাকার ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নবাবের মতো রাজত্ব করে চলেছেন ‘নাম্বার ওয়ান’খ্যাত এই নায়ক। চলচ্চিত্রে ২০ বছরের দীর্ঘ পথচলায় তিনি এখনো হয়তো কোনো কালজয়ী ছবি উপহার দিতে পারেননি, কিন্তু গণমানুষের সুখ-দুঃখের সঙ্গী হয়ে সমাজের ভালো খারাপ দিকগুলো ফুটিয়ে তুলবে এমন অনেক ছবি তিনি এরই মধ্যে উপহার দিয়েছেন।

পাঠকদের জন্য থাকছে আজ সেরকম হিট ১০টি ছবির আলোকপাত, যা করে তিনি তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছেন।

চলুন দেখে নেয়া যাক এমন কী কী ছবি রয়েছে-

সুপার হিরো

এই ছবির মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল, দেশের শত্রুরা যখন নিজ মাতৃভূমিকে ধ্বংস করার জন্য মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে, ঠিক তখনই তাদের প্রতিহত করতে সমাজের পক্ষের লোকের প্রয়োজন হয়। ঠিক তখনই তাদের প্রতিনিধি হয়ে একজন ‘সুপার হিরো’র আবির্ভাব ঘটে। যিনি কল্পনার কোনো সুপার হিরো নয়; তিনি ছিলেন সত্যিকারের সুপার হিরো, যে কিনা দেশকে বাঁচাতে প্রাণপণ লড়েই গেছেন। এমনই এক মূল ভাবনা নিয়ে পরিচালক আশিকুর রহমান তৈরী করেন অ্যাকশন থ্রিলার ছবি ‘সুপার হিরো’। ছবিটি প্রযোজনা করেছে হার্ট বিট প্রোডাকশন।

এতে শাকিব খানকে বাংলাদেশের একজন স্পেশাল ফোর্স কমান্ডারের মতো ব্যতিক্রমী এক চরিত্রে দেখা গেছে। তিনি ছাড়াও এছবিতে রয়েছে শবনম বুবলী, তারিক আনাম খান, মার্গারেট জি. রোলিং, টাইগার রবি, বড়দা মিঠু, সাদেক বাচ্চুসহ আরো অনেকেই।

নবাব

যৌথ প্রযোজনার ছবি নবাব। এই ছবির গল্পে দেখা গেছে বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ব্যাঞ্চে কাজ করা রাজিব চৌধুরী (শাকিব খান)কে কোনো এক বিশেষ কাজে কলকাতা যেতে হয়। সেখানে তার সামনেই কলকাতার মূখ্যমন্ত্রীকেকে সন্ত্রাসী দ্বারা আক্রমণ করা হলে চলতি পথেই তিনি মূখ্যমন্ত্রীকে সাহসীকতার সাথে বাচিয়ে নিয়ে আসেন। পরবর্তীতে মূখ্যমন্ত্রী তার অকুতোভয় দেখে একটি বড় অপারেশনের জন্য তাকে ডেকে নিয়ে আসেন। মূখ্যমন্ত্রী বুঝতে পেরেছিলেন, একমাত্র তার পক্ষেই এই অপারেশন দমন করা সম্ভব।

আর তা করা নাহলে ষড়যন্ত্রের কবলে পড়ে পুরো পশ্চিমবঙ্গ অভিভাবকহীন হয়ে যেতে পারে। রাজিব চৌধুরী কোলকাতা শহরটাকে হাতের তালুর মতন চিনেন, এখানেই তিনি ছোটবেলা থেকে বেড়ে উঠেছিলেন। তাই মূখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাব তিনি সাদরে গ্রহন করেন।

এরপর উপ-মূখ্যমন্ত্রী (খরাজ মূখার্জী) এবং কোলকাতা পুলিশ কমিশনার (রজতাভ দত্ত) তাকে টিম লিডার করে কয়েকজন চৌকস পুলিশ অফিসারকে তার টিমে শামিল করান। পরে রাজিব চৌধুরী এবং তার টিম জীবন বাজি রেখে নেমে পড়েন পর্দার আড়ালের মানুষকে খুজঁতে, যারা কিনা পেছনে বসে মূখ্যমন্ত্রীকে মারার ষড়যন্ত্র করছিলেন।

অ্যাকশন-ড্রামাটিক এছবিটি সব থেকে বেশি আলোচিত হয়েছিল শাকিব খানের ‘রাফ এন্ড টাফ’ লুকের কারণে। ফিট বডি, মুখে চাপ দাড়ি, ঠোটের ওপর রাজকীয় গোঁফ, সেইসাথে হাতা গুটিয়ে শার্ট পড়া। সব কিছু মিলে এই ছবিতে শাকিবকে এতোটাই স্মার্ট,হ্যান্ডসাম, ড্যাসিং, স্টাইলিশ লেগেছিল যে, যার ফলে এখনো নবাব ছবিটি দর্শকদের প্রাণে বেঁচে আছে।

ভারতের জয়দীপ মূখার্জী পরিচালিত বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত হয়েছে নবাব ছবিটি। জাজ মাল্টিমিডিয়া এবং এসকে মুভিজ প্রযোজিত এছবিতে অভিনয় করেছেন শাকিব খান, শুভশ্রী গাঙ্গুলী, খরাজ মূখার্জী, রজতাভ দত্ত, অমিত হাসান,অপরাজিতা আঢ্য, মেঘলা সহ আরো অনেকে।

শিকারী

শিকারী ছবির মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল, কলকাতার একটি স্থানে হঠাৎ করে কিছু নিখোঁজ বাচ্চার লাশের কংকাল, হাড়গোড় খুঁজে পাওয়া যায়। পরে সেই মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় জজ রুদ্র চৌধুরীর (সব্যসাচী চক্রবর্তী) উপর। রুদ্র চৌধুরী একজন সৎ মানুষ ও আইনের প্রতি আস্থাশীল। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি সব কিছু করতে পারেন। তাই হত্যাকান্ডের মূল হোতা ভয় পেয়ে গেল যে, তার সকল গোমর ফাঁস হয়ে যেতে পারে!

এই কারণে ওই লোক (ভিলেন) নিজের মিশন ঠিক ঠাক রাখতে জজকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু সমস্যা হলো, ভারতের কোনো কন্টাক্ট কিলারকে কাজটা দিলে ষড়যন্ত্রের ব্যাপারটা ফাঁস হয়ে যেতে পারে। তাই সে চিন্তায় জজকে মারার দায়িত্ব দেওয়া হলো বাংলাদেশের কন্ট্রাক্ট কিলার সুলতানকে (শাকিব খান)। যার আসল নাম হচ্ছে রাঘব।

ছোটবেলা থেকেই জজ বাবার অবাধ্য ছেলে ছিলেন রঘু ওরফে রাঘব। ঘটনাচক্রে একদিন বাবার হাত থেকে বাচতে পালিয়ে যায় সে। এবার বন্ধুর মাকে খুন করে শুরু হয় তার কিলিং মিশন! সেখান থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে। হয়ে ওঠে সুলতান। নিজেকে অপ্রতিরোধ্য করে তোলেন তিনি। টার্গেট কিলিংয়ে যার তুল্য আর কেউ নেই। কিন্তু জজকে শ্যূট করতে গিয়ে সে আবিস্কার করে ভিন্নকিছু। যা তিনি কখনো কল্পনাও করতে পারেননি।

বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনার এ ছবিটি পরিচালনা করেছেন ভারতের জয়দীপ মূখ্যার্জী। জাজ মাল্টিমিডিয়া এবং এসকে মুভিজের প্রযোজনায় ছবিতে অভিনয় করেছেন শাকিব খান, শ্রাবন্তী চ্যাটার্জী, সব্যসাচী চক্রবর্তী, রাহুল দেব, খরাজ মুখার্জী, অমিত হাসান, শিবা সানু, সুপ্রিয় দত্ত সহ আরো অনেকে।

ভালোবাসলেই ঘর বাধা যায় না

‘ভালোবাসলেই ঘর বাধা যায় না’ ছবিটির গল্প একেবারে ভিন্ন ধাচের। এর গল্পে দেখানো হয়েছে, খান পরিবারের ছেলে সূর্য খান (শাকিব) গরিবদের প্রতি খুব দয়ালু। তাই এলাকার গরিব-দুঃখীদের বিপদে আপদে সবসময় পাশে দাঁড়ান তিনি। অপরদিকে জান্তা (রুমানা) সূর্যকে মনেপ্রাণে অনেক বেশি ভালোবাসেন। তার পরিবার এবং সূর্যের পরিবার নিজেদের মধ্যে অজান্তা-সূর্যের বিয়ে নিয়ে বেশ আগে থেকে আলোচনা করে আসছিলেন।

সবকিছু ঠিকঠাক চললেও গল্প অন্যদিকে মোড় নেয়, যখন সূর্য কোনো এক কারণে তার বাড়ির কাজের মেয়ে আলোকে (অপু) বিয়ে করে পালিয়ে যান। এতে অজান্তা এবং সূর্যের পরিবার ভীষণ ক্ষেপে যায়। তারা সূর্য-আলোকে খুঁজে বের করার চেষ্টায় থাকে। এর পাশাপাশি গল্পও নানারকম টুইস্টে পরিপূর্ণ হতে থাকে।

এরকমই এক ত্রিভুজ প্রেমের গল্পে পরিচালক জাকির হোসেন রাজু নির্মাণ করেছেন রোম্যান্টিক-ফ্যামিলি-ড্রামা ছবি ‘ভালোবাসলেই ঘর বাধা যায় না’। ম্যাসটেক্স প্রোডাকশনের প্রযোজনায় এছবিটি মুক্তির পর যেমন ব্যবসায়িক সফলতা পায়, তেমনি দর্শকদের মুখেও প্রশংসার ফুলঝুরি বের হতে থাকে। ছবিটি মোট ৭টি ক্যাটাগরিতে জাতীয় পুরস্কার পায়। এই ছবি দিয়ে শাকিব খান নিজেও প্রথমবারের মতো জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন।

আমার প্রাণের প্রিয়া

জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত এবং হার্ট বিট প্রোডাকশন প্রযোজিত রোম্যান্টিক-কমেডি ছবি ‘আমার প্রাণের প্রিয়া’। ছবির কাহিনী মূলত এক লাভগুরুকে কেন্দ্র করে, যিনি সবসময় মানুষের ভালোবাসায় সাহায্য করে থাকেন। কিন্তু তিনি এখনো কোনো মেয়েকে ভালবাসেননি।

তবে হঠাৎ একদিন মিম এর সাথে তার দেখা হয় এবং সে তার প্রেমে পড়ে যায়। প্রাথমিকভাবে মিম তার প্রেমের প্রস্তাবে রাজি হননি। কারণ শাকিব ছিলেন বড় ব্যবসায়ীর একমাত্র পুত্র। যখন শাকিব তার ভালবাসার জন্য যথেষ্ট প্রমাণ দেন, তখন মীম তাকে গ্রহণ করেন। যখন তাদের ভালবাসা এগিয়ে যাচ্ছিল তখন মিমের ভাই মিশা সওদাগর তাদের মধ্যে বাধা হয়ে দাড়ায়। এবং শুরু হয়ে যায় একের পর দ্বন্দ্ব। এইভাবে এগিয়ে যায় ছবির মূল কাহিনী।

টিপিক্যাল লাভ স্টোরির ছবি হলেও, মনোমুগ্ধকর গানের জন্য এ ছবিটি বেশ জনপ্রিয়তা পায়। এর মধ্যে হৃদয় খানের গাওয়া‘চাইনা মেয়ে তুমি’ এবং এন্ড্রু কিশোর-কণক চাঁপার গাওয়া ‘কি জাদু করেছো বলনা’ এখনো তুমুল জনপ্রিয়! শাকিব খানের ভক্তদের মোবাইলে এখনো এসব গান বাজতে থাকে।

এদিকে, ছবিটিতে গানের পাশাপাশি নৃত্যপরিচালনাও ছিল দৃষ্টিনন্দন। ছবিটি সেসময় ব্যবসায়িকভাবে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করে। ছবিটিতে শাকিব খানের সাথে প্রথমবারের মতো জুটিবদ্ধ হন বিদ্যা সিনহা মীম। এছাড়াও অন্যান্য চরিত্রে আছেন মিশা সওদাগর,কাবিলা, নাসরিনসহ আরও অনেকে।

প্রিয়া আমার প্রিয়া

প্রিয়া আমার প্রিয়া ছবির প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল, হৃদয় (শাকিব খান) একজন কলেজ ছাত্র। সে থানার হেড কনস্টেবলের (প্রবৗর মিত্র) ছেলে। ডানপিটে হৃদয় একদিন কিছু সন্ত্রাসীদের সাথে মারপিঠ করলে তারা (সন্ত্রাসী) তাকে জখম করে পালিয়ে যায়। পরে আহত অবস্থায় প্রিয়া (সাহারা) তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং রক্ত দেয়। পরবর্তীতে হৃদয় প্রিয়াকে না দেখেই শুধু বন্ধুদের কাছে তার প্রশংসা শুনে প্রেমে পড়ে যায়।

প্রিয়া প্রথম দিকে হৃদয়কে দেখতে না পারলেও পরবর্তীতে সেও হৃদয়ের প্রতি ভালোবাসা অনুভব করে। কিন্তু প্রেমতো বাধাবিপত্তি ছাড়া হয়না। হৃদয়-প্রিয়ার মধ্যে সম্পর্কের বাধা হয়ে দাঁড়ায় প্রিয়ার ভাই (মিশা সওদাগর), যিনি একজন পুলিশ অফিসার। শুরু হয়ে যায় দুজনের ভালোবাসা নিয়ে বড় ভাইয়ের শত্রুতা।

বরাবরের মতো প্রিয়া আমার প্রিয়া ছবিটি গতানুগতিক প্রেমের ছবি। তবে এছবির বিশেষত্ব ছিল শাকিব খানের লুক। এতে তার চেহারা ছিল ড্যাসিং রংবাজ টাইপ। কাধ পর্যন্ত নামানো রং বেরঙের বাহারি চুল, ক্লিন সেভের সাথে কানের পাশ দিয়ে নামানো লম্বা চিপ, একপাশের আইব্রু ফূটো করে লাগানো ছোট্ট একটি রিং, ফুলহাতার বাহারি শার্ট এবং সাথে সাধারণ মানের জিন্স। সবমিলিয়ে গরিবের পুত্র হৃদয় চরিত্রটি করার জন্য শাকিব খানের এমন গেটআপ অপছন্দ করেছেন, এমন দর্শক খুব কমই পাওয়া যাবে। এছাড়াও গতিশীল গল্পের কারণে এছবি যথেষ্ট উপভোগ্য।

তবে প্রিয়া আমার প্রিয়া ছবিটি পরিচালক বদিউল আলম খোকন এবং প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আশা প্রোডাকশনস ভারতের কন্নড় ভাষার ছবি ‘আপ্পু’ (২০০২) দেখে বানিয়েছেন। এই ছবিতে শাকিব খানের সঙ্গে আরো অভিনয় করেছেন সাহারা, মিশা সওদাগর,প্রবীর মিত্র, ববি, ইলিয়াস কোবরাসহ আরো অনেকে। ছবিটি মুক্তির পর ব্লকবাস্টার ব্যবসা করে। আর শাকিব খানের ক্যারিয়ারের অন্যতম সর্বাধিক আয়ের ছবি বলা যায় এটিকে।

ডাক্তার বাড়ী

এক গ্রামের একই পরিবারের তিন ভাই, যাদের তিনজনই ডাক্তার। বড় ভাই (এ.টি.এম শামসুজ্জামান) এলোপ্যাথির, মেঝো ভাই (অমিত হাসান) হোমিওপ্যাথির এবং ছোটভাই (শাকিব খান) হলেন পশু বিশেষজ্ঞ। তারা তিনজনই পুরো গ্রামে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে থাকেন।

তবে তিনজন ভিন্ন ঘরানার চিকিৎসক একই বাড়িতে থাকায় আদর সোহাগের পাশাপাশি তাদের মধ্যকার ঝামেলাও কম হয় না। এভাবেই মজাদার সব খুনসুটি এবং পারিবারিক সেন্টিমেন্টকে ঘিরে পরিচালক আজিজুর রহমান নির্মাণ করেন ফ্যামিলি-কমেডি-ড্রামার ছবি ‘ডাক্তার বাড়ী’।

এই ছবিটিতে অভিনয় করেছেন এ.টি.এম শামসুজ্জামান, অমিত হাসান, শাকিব খান, সুচরিতা, জনা, শাবনাজ, খলিল,সালাউদ্দিন লাভলু, আফজাল শরীফসহ আরো অনেকে। আর ছবিটি প্রযোজনা করেছে ছায়াছন্দ ম্যাগাজিন লিমিটেড এবং এনটিভি প্রোডাকশন হাউজ।

সুভা

সিনেমায় তার নাম সুভাসিনী (পূর্ণিমা)। কিন্তু গ্রামের সবাই তাকে ‘সুভা’ বলেই ডাকে। তার বড় দুই বোন সুহাসিনী ও সুকেশিনীর নামের সঙ্গে মিলিয়ে তার নাম রাখা হয়। যে মিষ্টি স্বরে কথা বলে বিধায় তাকে সুভাসিনী বলা হয়, কিন্তু সেই সুভা জন্ম থেকেই বধির। তাই সমবয়সীদের সাথে সে খেলতে পারতো না, তারা সুভাকে বিষিয়ে তুলতো। একা একা চলতে থাকা সুভার সখ্যতা গড়ে ওঠে গ্রামের এক যুবক প্রতাপের (শাকিব খান) সাথে। প্রতাপ ও সুভা একে অপরকে বুঝে এবং ভালবাসতে শুরু করে।

পরবর্তীতে প্রতাপ সুভার বাবাকে তাদের বিয়ের কথা বললে সুভার বাবা বাণীকণ্ঠ (সালেহ আহমেদ) প্রতাপের বাবা গোবিন্দের (তুষার খান) কাছে তাদের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসে। কিন্তু বিধি বাম! গোবিন্দ তা ফিরিয়ে দেয় এবং বাণীকন্ঠকে অপমান করে তার বাড়ি থেকে বের করে দেয়।

অপমানিত হয়ে বাড়ি ফিরে বাণীকণ্ঠ তার স্ত্রী (সুজাতা) ও মেয়েকে নিয়ে কোলকাতায় তার বড় মেয়ের বাড়ি চলে যায়। সেখানে তারা সুভার বিয়ের জন্য পাত্র দেখে। পাত্র নিবারণ (সাজন) তার বন্ধুকে নিয়ে সুভাকে দেখতে আসে এবং তাদের মেয়ে পছন্দ হয়। ফলে শীঘ্রই নিবারণ সুভাকে বিয়ে করে। কিন্তু বিয়ের পরদিন সে জানতে পারে সুভা কথা বলতে পারে না, যা সুভার জন্য পরবর্তীতে দুঃখ বয়ে নিয়ে আসে।

চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত এছবিতে পূর্ণিমা ও শাকিব ছাড়া আরো অভিনয় করেছেন তুষার খান, সালেহ আহমেদ, সুজাতা,সাজন, সবিতা ব্যাণার্জী, চাষী নজরুল ইসলামসহ আরো অনেকে। ইমপ্রেস টেলিফিল্মের প্রযোজনায় ছবিটি নির্মাণ করা হয়েছে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের একই নামের বিখ্যাত ছোটগল্প অবলম্বনে।

তবে ছবিটির মূল নাম ভুলিকায় পূর্ণিমা থাকলেও শাকিব খান এছবিতে তার যোগ্যতার সাক্ষর রেখেছেন। এছবিটি তার ক্যারিয়ারে একটা ভিন্নতা সৃষ্টি করেছে। তিনি দেখিয়েছেন, শুধু বাণিজ্যিক ছবি নয়, তাকে নিয়ে সাহিত্যিক ছবিও সম্ভব! ভালো গল্প, ভালো অভিনয় এবং ভালো মিউজিকের জন্য এছবিটিও বেশ জনপ্রিয়তা পায়।

আমার স্বপ্ন তুমি

আমার স্বপ্ন তুমি ছবি প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল, সুমন (শাকিব) একজন শিক্ষিত বেকার যিনি বি.এ শেষ করার পর অনন্তপুর গ্রামে থাকেন। খুশি (শাবনুর) হলো সুমনের খুব কাছের একজন বন্ধু। দীর্ঘসময় তারা একে অপরের নিকট ঘনিষ্ঠ থাকায় সুমন একসময় খুশির প্রেমে পড়ে যায়। কিন্তু খুশির একটি বদঅভ্যাস ছিল, সেটি হলো ইচ্ছায়/অনিচ্ছায় মিথ্যে বলা। এই মিথ্যে বলার অভ্যেসটাই একসময় খুশি-সুমনের ভালোবাসার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। যার জন্য উভয়কে চরম মূল্য দিতে হয়।

হাসিবুল ইসলাম মিজান পরিচালিত এছবিতে শাকিব খান ছিলেন অনেকটাই অ্যান্টি-হিরোর চরিত্রে। আর এই চরিত্র দিয়েই সব শ্রেণির দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছিলেন তিনি। বলা বাহুল্য, এছবি দিয়েই শাকিব খানের সুপারহিট হওয়ার পথ সুগম হতে থাকে। এরপর থেকেই ইন্ডাস্ট্রিতে শাকিব খানের ডিমান্ড বাড়তে থাকে। বড় বড় প্রযোজকেরা তাকে মূল নায়ক কিংবা যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের জন্য কাজ করার আগ্রহ দেখায়। এন.এন. পিকচার্স প্রযোজিত রোম্যান্টিক-ড্রামা ঘরানার এছবিতে অভিনয় করেছেন শাকিব খান, শাবনূর, ফেরদৌস, আবুল হায়াত, শর্মিলী আহমেদ, আফজাল শরীফ, ডন, রেহানা জলি, এ.টি.এম শামসুজ্জামান, নাসির খানসহ আরো অনেকে।

সিটি টেরর

সিটি টেরর ছবিতে মান্না ও শাকিব দুজনই পেশাদার খুনী। মান্না উপরের লেভেলের সাথে অনেক আগে থেকেই জড়িত তাই শাকিব তাকে বড়ভাই বলে মানেন। মান্নাও তাকে ছোটভাইয়ের মতোই স্নেহ করেন। ছবিতে তারা একত্রে বিভিন্ন অভিযানে গিয়ে সফলও হয়েছেন এবং ধীরে ধীরে আন্ডারওয়ার্ল্ডে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিয়েছেন।

এদিকে, ঘটনাচক্রে একটি হোটেলে শাকিবের সাথে ছবির নায়িকা বৈশাখীর দেখা হয়। শাকিব তাকে পছন্দ করা শুরু করলে মান্না তার সাথে সম্পর্ক করতে শাকিবকে সাহায্য করে। অন্যদিকে ছবির অন্য নায়িকা পপি একজন বার ড্যান্সার, কিন্তু সে স্বপ্ন দেখেন একদিন তিনি মান্নার জীবনসঙ্গিনী হবেন। শাকিব যখন বৈশাখীকে বিয়ের কথা বলে এবং তার খুনী জীবনের গল্প শুনায়, তখন বৈশাখী ও তার মা দুলারী কেউই বিয়ের ব্যাপারে রাজি হয় না। পরবর্তীতে তাদের মধ্যে পাঁচ কোটি টাকার একটি বিনিময় চুক্তি হয়। যদি শাকিব এটা বৈশাখীর পরিবারকে দিতে পারে এবং এই টেরর লাইফকে ছাড়তে পারে, তবেই শাকিব পাবেন বৈশাখীকে। আর এই ৫ কোটি টাকা জোগাড় করতে গিয়ে শাকিব তার বিবেক হারিয়ে বসে, হারিয়ে বসে জীবনের সবথেকে আপন মানুষটিকে।

এ.এন ফিল্মস প্রযোজিত সিটি টেরর ছবির ক্লাইম্যাক্সে শাকিব খান যেই অভিনয়টা দেখান, সেটি আজো দর্শকদের মনে জেগে আছে। ঐ সিচ্যুয়েশনে যেরকম এক্সপ্রেশন, এ্যাটিচিউট, এগ্রেশন থাকার দরকার ছিল, শাকিব তার পুরোটাই ঢেলে দিতে পেরেছেন। ছবিটি মুক্তির পর ভালো ব্যবসা করেছিল।

এম. এ রহিম পরিচালিত এই ছবিতে শাকিব খান পার্শ্বচরিত্রে ছিলেন, মূল নায়ক ছিলেন সুপারস্টার মান্না।

এসব ছাড়াও শাকিবের বেশ জনপ্রিয় ছবির তালিকায় আরো রয়েছে – ‘নাচনেওয়ালী’, ‘ফুল নেবো না অশ্রু নেবো’, ‘সাহসী মানুষ চাই’, ‘ওরা দালাল’, ‘খুনি শিকদার’, ‘নগ্ন হামলা’, ‘বাঁধা’, ‘চাচ্চু’, ‘টিপ টিপ বৃষ্টি’, ‘সমাধি’, ‘নিঃশ্বাস আমার তুমি’, ‘মাটির ঠিকানা’, ‘খোদার পড়ে মা’, ‘ভালোবাসা আজকাল’, ‘ফুল অ্যান্ড ফাইনাল’, ‘পূর্ণ্যদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী’, ‘রাজত্ব’, ‘ফাঁদ’, ‘এইতো প্রেম’, ‘আরো ভালোবাসবো তোমায়’, ‘সত্তা’, ও ‘রাজনীতি’।