• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

আজকের পটুয়াখালী
ব্রেকিং:
২০৩২ সাল পর্যন্ত ইইউতে জিএসপি সুবিধা পেতে আয়ারল্যান্ডের সমর্থন চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে পাশে আছি: প্রধানমন্ত্রী জনসমর্থন থাকায় আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করা অসম্ভব রোহিঙ্গাদের জন্য বৃহত্তর তহবিল সংগ্রহে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান গাজায় শিশুহত্যা চলছে, কোথায় বিশ্বমানবতা লেখাপড়ার নামে শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ সৃষ্টি না করার আহ্বান বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি বিশ্বে অনেক বাজার আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে: প্রধানমন্ত্রী ট্রাস্ট করে ভাষা সংরক্ষণ-উন্নয়নের উদ্যোগ, হচ্ছে আইন ‘কিডনি রোগীদের চিকিৎসায় নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার’ ইফতার পার্টি না করে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে দেশে ফিরেছেন রাষ্ট্রপতি রোজার তাৎপর্য অনুধাবন করে সমাজ জীবনে প্রতিফলন ঘটানোর আহ্বান পবিত্র মাহে রমজানে বাংলাদেশসহ মুসলিম জাহানের কল্যাণ কামনা কোস্ট গার্ডকে ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলছে সরকার প্রেস সচিব ইহসানুল করিমের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক প্রকাশ প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতির শোক আমরা সমুদ্র সীমার অধিকার নিশ্চিত করেছি: প্রধানমন্ত্রী ৪১ সালের মধ্যে দুর্যোগ সহনশীল ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার আশা গবেষণা জাহাজ সংগ্রহের পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী

শেষ হলো ইতিহাসের সংক্ষিপ্ততম বাজেট অধিবেশন

আজকের পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ৯ জুলাই ২০২০  

করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে দেশের সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত বাজেট অধিবেশন বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) শেষ হলো। ৯ কার্যদিবসের এই অধিবেশনে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটের ওপর আলোচনা হয়েছে মাত্র দুই দিন। এছাড়া সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনা হয়েছে একদিন। বাজেটের ওপর আলোচনার দিন ও ঘণ্টার হিসেবে এটি ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে সব থেকে কম। অতীতে বাজেটের ওপর ৪০ থেকে ৬৫ ঘণ্টার মতো আলোচনা হয়েছে। এবার আলোচনা হয়েছে ৫ ঘণ্টা ১৮ মিনিট। ৯ দিনের অধিবেশনের দুটি কার্যদিবস চলেছে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে অধিবেশন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় নানা শঙ্কা ও উৎকণ্ঠা ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত ভালোয় ভালোয় এটি সম্পন্ন হয়েছে। সরকারের মন্ত্রিসভার একজন সদস্যসহ সংসদ অধিবেশনে যোগ দিয়েছিলেন এমন দুই জন সংসদ সদস্যের করোনাভাইরাস আক্রান্তের খবর পাওয়া যায় সংসদ অধিবেশনের মাঝপথে। এ নিয়ে এমপিদের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ তৈরি হলেও আর কারও আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে ওই দুই সদস্যের সংক্রমণের খবরে অধিবেশনের শেষ দিকে তালিকাভুক্ত সব সংসদ সদস্যের করোনা পরীক্ষা করিয়ে বৈঠকে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়।

এর আগে সংসদ অধিবেশন সংশ্লিষ্ট সংসদ সচিবালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর কোভিড-১৯ পরীক্ষা করানো হয়। এতে ৯৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে প্রতিদিন সকালে অধিবেশন শুরু করে এক বেলায়ই বৈঠক শেষ করা হয়।

মহামারিকালে এ বছর বাজেট উপস্থাপনেও ছিল ভিন্নধর্মী আয়োজন। প্রতিবছর অর্থমন্ত্রীকে তিন থেকে পাঁচ ঘণ্টা ধরে সংসদে বক্তব্য দিয়ে বাজেট উপস্থাপন করতে দেখা গেলেও এবার মাত্র ৫৭ মিনিটে বাজেট উপস্থাপন শেষ হয়। এর মধ্যে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য ছিল মাত্র ৬-৭ মিনিট। বাকি পুরো সময়টা ডিজিটাল পদ্ধতিতে বাজেটের বিস্তারিত বিষয় তুলে ধরা হয়। বাজেট ডকুমেন্ট বিতরণেও ছিল এবার সাদামাটা আয়োজন।

প্রতি বছর পাটের ব্যাগে বেশ কয়েকটি পুস্তক সরবরাহ করা হলেও এবার কাগজের খামে দুই/তিনটি বই সরবরাহ করা হয়। অবশ্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে বইগুলো পিডিএফ আকারে আপলোড করা হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে অধিবেশন সমাপনী সম্পর্কে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আদেশ পড়ে শোনানোর মধ্য দিয়ে সমাপ্তি টানেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। বাজেট অধিবেশন বিষয়ে স্পিকার বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিশেষ পরিস্থিতিতে একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করে এ অধিবেশন পরিচালনা করা হয়েছে। যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে সতর্কতার সঙ্গে অধিবেশন চালানো হয়েছে। কার্যপ্রণালি বিধি অনুসরণ করে অধিবেশন পরিচালনা করা হয়েছে।’

স্পিকার সমাপনী বক্তব্যে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি তুলে ধরেন। একইসঙ্গে এই মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন।

বৈশ্বিক মহামারির মধ্যে গত ১০ জুন বাজেট অধিবেশন শুরু হয়। শুরুর দিন ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লার মৃত্যুতে আনা শোকপ্রস্তাব গ্রহণের মধ্য দিয়ে বৈঠক মুলতবি করা হয়। পরদিন ১১ জুন সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট পেশ হয়। দুইদিন বিরতি দিয়ে ১৪ জুন পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবি করা হয়। এরই মাঝে সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ নাসিম ও ধর্মপ্রতিমন্ত্রী শেখ মুহম্মদ আবদুল্লাহ মারা যান। যার ফলে ১৪ জুনের বৈঠকও শোকপ্রস্তাব গ্রহণের মধ্যে শেষ হয়।

যদিও পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৪ জুন বৈঠকে সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনার কথা ছিল। পরদিন ১৫ জুন মাত্র এক ঘণ্টা আলোচনার মধ্যদিয়ে সম্পূরক বাজেট পাস হয়।

এরপর ২৩ জুন পর্যন্ত বৈঠক মুলতবি করা হয়। ২৩ জুন বেলা ১১টায় বৈঠক বসে কয়েকটি বিল উপস্থাপন শেষে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনা শুরু হয়।

অবশ্য এর আগে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দল আওয়ামী লীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংসদে বক্তব্য দেন। ওই দিন বাজেটের ওপর ১১ জন সংসদ সদস্য বাজেটের ওপর আড়াই ঘণ্টা আলোচনা করেন।

এরপর আরও ছয় দিন বিরতি দিয়ে ২৯ জুন সংসদের বৈঠক বসে। ওই দিন বাজেটের ওপর প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনাসহ চারজন এক ঘণ্টা ৫০ মিনিট আলোচনা করেন। এরপর পাস হয় অর্থবিল। পরদিন ৩০ জুন বাজেট পাস হয় সংসদে।

মোট ১৮ জন সংসদ সদস্য পাঁচ ঘণ্টা ১৮ মিনিট বাজেটের ওপর আলোচনা করেন। বিল পাস হয় পাঁচটি।

প্রতি বছর বাজেট পাসের সময় অন্তত অর্ধ ডজন দাবির ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হলেও এবার মাত্র দুটি মন্ত্রণালয়ের ওপর আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। মন্ত্রণালয় দুটি ছিল স্বাস্থ্য ও আইন।

এবার বাজেটে ৫৯টি দাবির বিপরীতে ৪২১টি ছাঁটাই প্রস্তাব এসেছিল। জাতীয় পার্টি ও বিএনপির ৯ জন সদস্য এই ছাঁটাই প্রস্তাবগুলো দিয়েছিলেন।

এবার বাজেট অধিবেশনে সম্পূরক বাজেটের ওপর দুই দিন এবং সাধারণ বাজেটের ওপর ছয় দিন আলোচনার সিদ্ধান্ত হয়। সব মিলিয়ে ২০/২২ ঘণ্টার মতো আলোচনার পরিকল্পনা ছিল। তবে মাঝপথে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এই পরিকল্পনায় কাটছাঁট করা হয়।

এবার অধিবেশনে সামাজিক দূরত্ব মেনে বসানো হয় সংসদ সদস্যদের। সেজন্য অধিবেশনে আইনপ্রণেতাদের উপস্থিতি ৮০-৯০ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়। সংসদে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশ ছিল বন্ধ।