• রোববার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের পটুয়াখালী
ব্রেকিং:
বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীর বিচারের সিদ্ধান্ত

আজকের পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ১৭ এপ্রিল ২০২১  

১৯৭৩ সালের এইদিনে বাংলাদেশ সরকার জানায় যে, ১৯৫ জন পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীর বিচার করা হবে। একই বছরের মে মাসের শেষের দিকে ঢাকায় একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরু হবে। বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হবে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির পদমর্যাদাসম্পন্ন বিচারকদের নিয়ে। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিচার পদ্ধতিতে পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে। এছাড়া বিচার ব্যবস্থা দেখার জন্য আমন্ত্রিত হবেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইন বিশারদরা। বাংলাদেশ সরকারের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী ও তাদের সহযোগীদের অপরাধ সংক্রান্ত তদন্ত প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে গুরুতর অপরাধে ১৯৫ জন ব্যক্তির বিচার অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাদের অপরাধের মধ্যে রয়েছে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, জেনেভা কনভেনশনের ৩ নম্বর ধারায় নরহত্যা, বলাৎকার ও বাড়িঘর পোড়ানো। ঢাকায় বিশেষ ট্রাইব্যুনালে তাদের বিচার হবে।

শান্তি প্রতিষ্ঠার যৌথ উদ্যোগ

বাংলাদেশ ও ভারত একইসঙ্গে  যুদ্ধ অপরাধী ছাড়া সব পাকিস্তানি যুদ্ধবন্দি, বেসামরিক বন্দি ও পাকিস্তানে যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশে বসবাসকারী অবাঙালিদের ফেরত পাঠানো এবং পাকিস্তানে জোরপূর্বক আটকে রাখা বাঙালিদের দেশে আনার মাধ্যমে সকল মানবিক সমস্যা সমাধানে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এ খবর জানায় বাসস।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেনের চার দিনব্যাপী নয়াদিল্লি সফর শেষে ঢাকা ও দিল্লি থেকে প্রকাশিত যৌথ ঘোষণায় এ কথা বলা হয়।

ঘোষণায় বলা হয়, বাংলাদেশ ও ভারতের এই গঠনমূলক উদ্যোগের জবাবে পাকিস্তানের সিদ্ধান্তের মাধ্যমেই তা বাস্তবায়ন সম্ভব হতে পারে। ঘোষণায় আরও বলা হয়, সর্বত্রভাবে উপমহাদেশের স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য সামনে রেখে দেশের সার্বভৌমত্বের ভিত্তিতে বাংলাদেশ, ভারত  ও পাকিস্তানের মধ্যে বন্ধুত্ব, সম্প্রীতি এবং প্রতিবেশীর সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার সমস্যাটি নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারত সরকার আগাগোড়াই চিন্তা ও বিবেচনা করে আসছিল। যাতে কিনা এ তিনটি দেশ তাদের সম্পদ ও সম্পত্তি তাদের জনগণের কল্যাণ সাধনে নিয়োজিত করতে পারে। এই উদ্দেশ্য সামনে নিয়ে ভারত সরকার ও বাংলাদেশ সরকার পারস্পরিক আলোচনা চালিয়ে আসছে।  উল্লেখ্য, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার শরণ সিংয়ের আমন্ত্রণে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন ১৩ এপ্রিল থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত দিল্লি সফর করেন।

 ১৯৭৩ সালের ১৮ এপ্রিল প্রকাশিত পত্রিকার শিরোনাম

বাংলাদেশ ও ভারত সরকার উপমহাদেশে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার এবং ১৯৭১ সালের যুদ্ধ পরবর্তীতে সামরিক ও অন্যান্য সমস্যার সমাধানের পদক্ষেপ বিবেচনা করে। উপমহাদেশে সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বলা হয়, উপমহাদেশের বাস্তবতাকে স্বীকৃতিদানে পাকিস্তানের ব্যর্থতার দরুণ উপমহাদেশের বন্ধুত্ব ও সম্পত্তির কাজে কোনও অগ্রগতি হয়নি।

সফর শেষে ঢাকায় ফিরে এসে সাংবাদিক সম্মেলনে ড. কামাল হোসেন জানান, ঢাকার মাটিতে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর ১৯৫ জনকে গুরুতর অপরাধ সংঘটনের দায়ে বিশেষ ট্রাইব্যুনালের সম্মুখীন হতে হবে। এই দিনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মন্তব্য করেন, পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর বিচার সম্পর্কে বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের একটি যুক্ত ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়েছে। আগামী মে মাসের শেষ নাগাদ বিচার শুরু হতে পারে এবং এ ব্যাপারে সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থা প্রয়োজনীয় তৎপরতা চালাচ্ছে।

পাকিস্তানের নতুন শাসনতন্ত্রে বাংলাদেশকে পূর্ব পাকিস্তান হিসেবে চিহ্নিত করা এবং বিদেশি শক্তির দখলমুক্ত হওয়ার পর পূর্ব পাকিস্তান পাকিস্তান ফেডারেশনের সঙ্গে একত্রিত হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন এটাকে ‘বাজে’ বলে অভিহিত করেন।

শ্বেতপত্র প্রকাশের আহ্বান

ভারতে মুদ্রিত ১০০, ১০ ও ৫ টাকার নোট অচল ঘোষণার সরকারি সিদ্ধান্ত প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্তে নানা জল্পনা-কল্পনা ও প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। ধারণা করা হয়েছিল যে, ভারতে মুদ্রিত নোট পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নেওয়া হলে বাংলাদেশ ও ভারতের টাকার মান সমান হবে। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, কলকাতা ও আগরতলার বেসরকারি বাজারে ভারতে মুদ্রিত বাংলাদেশের একশ’ টাকার মূল্য ভারতীয় মুদ্রার ৫০ টাকার সমান। উপরিউক্ত সরকারি ঘোষণা প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে ব্রিটেনে মুদ্রিত বাংলাদেশের একশ’ টাকার মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে ভারতের ৭০ টাকা সমান হয়। অনেকে মনে করেছিল যে, ভারতে ছাপানো নোট সম্পূর্ণ প্রত্যাহার হলে ভারত-বাংলাদেশের মুদ্রার বেসরকারি মান সমান সমান হবে। কিন্তু এরইমধ্যে বাংলাদেশ ও ভারত উভয় রাষ্ট্রের এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী এ ব্যাপারে যে মারাত্মক সর্বনাশী খেলায় মেতেছে, তার কারণে সরকারি উদ্যোগ বানচাল হওয়ার উপক্রম হয়েছিল।