• বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৬ ১৪৩১

  • || ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের পটুয়াখালী
ব্রেকিং:
প্রতিজ্ঞা করেছিলাম ফিরে আসবোই: শেখ হাসিনা জনগণের শক্তি নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি: শেখ হাসিনা আজ হজ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক ৭ মে: গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারে শেখ হাসিনার দেশে ফেরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আইওএম মহাপরিচালকের সৌজন্য সাক্ষাৎ গ্রামে দ্রুত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আহসান উল্লাহ মাস্টার ছিলেন শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষের সংগ্রামী জননেতা : প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের আস্থা অর্জন করেছে ঢাকা সেনানিবাসে এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে? যে ২৫ জেলায় আজ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী ‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী

দেশে ৫ বছরে মোটা চালের দাম ৫৬% ও আটার দাম বেড়েছে ৫৭%

আজকের পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ২২ এপ্রিল ২০২৪  

সরকারের খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটি (এফপিএমসি) জানিয়েছে, দেশে বিগত পাঁচ বছরে মোটা চালের দাম ৫৬ শতাংশের বেশি বেড়েছে। আর এই সময়ে খোলা আটার দাম বেড়েছে ৫৭ শতাংশ। প্রধান এই দুই খাদ্যের দাম বাড়ায় বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ।
সরকারের খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির (এফপিএমসি) বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের মার্চে দেশে মোটা চালের গড় দাম ছিল ৩১ টাকা ৪৬ পয়সা, যা গত মার্চে দাঁড়িয়েছে ৪৯ টাকা ১১ পয়সা। এই পাঁচ বছরে ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে চালের দাম। বৈঠকে খোলা আটার দামের পরিস্থিতিও তুলে ধরা হয়। জানানো হয়, ২০২০ সালের মার্চে খোলা আটার গড় দাম ছিল প্রতি কেজি ২৭ টাকার কিছু বেশি। গত মার্চে তা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৩ টাকা।

গত বছর খোলা আটার দাম আরো বেশি ছিল, প্রতি কেজি প্রায় ৫৯ টাকা। পণ্যটির দাম গত বছরের তুলনায় কমলেও ২০২০ সালের চেয়ে এখনো ৫৭ শতাংশ বেশি।

রোববার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভা হয়। কমিটির সভাপতি খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। কমিটিতে ৮ জন মন্ত্রী ও ১০ জন সচিব সদস্য। সভায় কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ, ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী রোকেয়া সুলতানা, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এতে চলতি বছর বোরো মৌসুমে কৃষকের কাছ থেকে ৩২ টাকা কেজি দরে ৫ লাখ টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত হয়। এবার দাম প্রতি কেজিতে দুই টাকা বাড়ানো হয়েছে।

বৈঠক শেষে খাদ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, প্রয়োজনে কৃষকের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টনের বেশি ধান কেনা হবে। ধানের পাশাপাশি এবার ৪৫ টাকা কেজি দরে ১১ লাখ টন সেদ্ধ চাল সংগ্রহ করা হবে। গতবার এটি ৪৪ টাকা কেজি দরে কেনা হয়েছিল। এ ছাড়া ৪৪ টাকা কেজি দরে এক লাখ টন আতপ চাল কিনবে সরকার। ৩৪ টাকা কেজি দরে ৫০ হাজার টন গমও কেনা হবে। আগামী ৭ মে থেকে ধান কেনা শুরু হবে এবং ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তা চলবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বেশি ধান কেনা হবে হাওর থেকে। তিনি বলেন, কৃষক যাতে তার উৎপাদনের ন্যায্যমূল্য পান, সে জন্য এবার ধানের দাম কেজিতে দুই টাকা বাড়ানো হয়েছে।

খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভায় খাদ্য উৎপাদন, আমদানি, বিশ্ববাজারে দাম, দেশের দর, মজুত ইত্যাদি পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। এতে দেখা যায়, ২০২২–২৩ অর্থবছরে চাল উৎপাদিত হয়েছে ৩ কোটি ৯১ লাখ টন।

যদিও কৃষি মন্ত্রণালয়ের লক্ষ্য ছিল প্রায় ৪ কোটি ১৬ লাখ টন। চাল, গম ও ভুট্টা মিলিয়ে খাদ্যশস্য উৎপাদনের লক্ষ্য ছিল প্রায় ৪ কোটি ৮৫ লাখ টন। উৎপাদিত হয়েছে ৪ কোটি ৪৮ লাখ টনের কিছু বেশি।

চলতি ২০২৩–২৪ অর্থবছরের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় ৪ কোটি ৩৪ লাখ টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্য ঠিক করেছে। দুটি মৌসুমের হিসাব পাওয়া গেছে। যেখানে দেখা যায় আউশের উৎপাদন গত মৌসুমের প্রায় সমান হয়েছে—প্রায় ৩০ লাখ টন। আমনের সাময়িক প্রাক্কলনে প্রায় ১ কোটি ৬৬ লাখ টন চাল উৎপাদিত হয়েছে বলে ধরা হয়েছে, যা গত মৌসুমের চেয়ে ১২ লাখ টন বেশি।

চাল ও আটা দেশের মানুষের প্রধান খাদ্য। চালের দাম যখন বাড়তি, তখন আটার দামও চড়া। যদিও বিশ্ববাজারে গমের দাম ২০২০ সালের পর্যায়ে নেমে এসেছে। এমনকি বাংলাদেশে গম আমদানির দুটি উৎস রাশিয়া ও ইউক্রেনে গমের দাম ২০২০ সালের মার্চের চেয়েও কম।

খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভায় তুলে ধরা হয় যে ২০২০ সালের মার্চে রাশিয়ার গমের প্রতি টনের দর ছিল ২১৪ ডলার, যা ২০২২ সালের মার্চে ৪১০ ডলারে উঠেছিল। গত মার্চে তা নেমে যায় ২০৪ ডলারে। বাংলাদেশে ২৭ টাকা কেজির আটা ৫৯ টাকায় উঠে এখন ৪৩ টাকায় নেমেছে। দাম এখনো এত বেশি থাকার বড় কারণ মার্কিন ডলারের মূল্যবৃদ্ধি। এ সময় ডলারের দাম বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ। ডলারের দাম বিবেচনায় নিলেও দেখা যায়, বিশ্ববাজারে গমের দাম যে হারে কমেছে, আটার দাম ততটা কমেনি।

খাদ্যের দাম বাড়লে বিপাকে পড়েন নিম্ন আয়ের মানুষ। ২০২২ সালে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) এক গবেষণায় দেখিয়েছিল, অতি গরিব শ্রেণিভুক্ত একজন মানুষ তার ব্যয়ের ৩২ শতাংশ খরচ করেন চাল কিনতে। গরিব মানুষের ক্ষেত্রে এই হার ২৯ শতাংশ। এ ছাড়া গরিব নন, এমন ব্যক্তি তার ব্যয়ের এক-পঞ্চমাংশ চাল কেনায় খরচ করেন।

সরকারি বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে কম দামে মানুষকে খাদ্যসহায়তা দেওয়া হয়। তবে অর্থনীতিবিদেরা মনে করেন, চাহিদার তুলনায় তা কম। অন্যদিকে মূল্যস্ফীতি যে হারে বাড়ছে, মজুরি বাড়ছে তার চেয়ে কম হারে। মানে হলো, শ্রমজীবী মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে।

বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম গণমাধ্যমকে বলেন, চাল ও আটা দুটি গুরুত্বপূর্ণ পণ্য। এর দাম বাড়লে স্বল্প আয়ের পাশাপাশি মধ্যম আয়ের মানুষও চাপে পড়ে।

তিনি বলেন, মজুরি যতটা বাড়ছে, তার চেয়ে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে বেশি। ফলে অনেকের পক্ষে বাড়তি আয় দিয়েও ব্যয় মেটানো সম্ভব হচ্ছে না।