বাঘের দেশের সমুদ্র সৈকত
আজকের পটুয়াখালী
প্রকাশিত: ১২ অক্টোবর ২০১৯
সুন্দরবন ভ্রমণের বড় একটা অংশ কেটে যায় নদী-খালেই। যারা মনে করেন, সুন্দরবন মানেই সারাদিন বন-বাদাড়ে ঘুরে বেড়ানো; তাদের ধারণা অনেকটাই ভুল। জলপথ দিয়ে যখন আপনার সুন্দরবন যাত্রা শুরু হবে, তখন থেকে বেশিরভাগ সময় কাটবে পানিতে। পুরো সুন্দরবন জুড়ে প্রায় দু’শটির বেশি খাল মাকড়সার মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। ছোট ছোট নৌকা দিয়ে যখন বনের ভেতরে প্রবেশ করবেন তখনই টের পাবেন সুন্দরবন কতটা সুন্দর! হিসেব করলে এটাও বেশ বড় ধরনের অ্যাডভেঞ্চার। তবে হ্যাঁ, মুখ বন্ধ রেখে মনের চোখগুলো খোলা রাখতে হবে। ‘এই বুঝি বাঘ এল’ এমনটাই মনে হবে তখন!
সুন্দরবনের চিকন চিকন খালগুলো এখনো আমার চোখের সামনে ভাসছে ঠিকই, কিন্তু সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করেছে সেখানকার সৈকতগুলো। একেক সৈকতের একেক রূপ। বিশাল জলরাশির উচ্ছ্বাসতা ছাড়া একটার সঙ্গে আরেকটার কোনো মিল নেই। কোনো সমুদ্র সৈকতে যেন মুক্তার দানা বিছিয়ে রেখেছে, আবার কোনোটার বালি এতটাই চাকচিক্য; তা কোন শব্দ ব্যবহার করলে বোঝানো যাবে তা আমার জানা নেই। এমনকি একটার তীরে কাশফুলের রাজ্য দেখেছি। তা দেখে দ্বিধায় পড়ে গেলাম, কাশবনে আগে যাব নাকি সৈকতে।
সুন্দরবনের চিত্রা হরিণ
ট্যুর বুক-এর আয়োজনে আমরা অর্ধশত জন খুলনা থেকে সুন্দরবন যাত্রা শুরু করি ৩ অক্টোবর। বলতে গেলে চারদিনের প্রথম দু’দিন লঞ্চেই কেটেছে। খাওয়া-দাওয়া, গান-বাজনা, গল্প-আড্ডা এসব করতে করতে সময় পার করেছি আমরা। লঞ্চ কিন্তু ছুটে চলছেই একটার পর আরেকটা নদীতে। দ্বিতীয় দিনে অবশ্য হাড়বাড়ীতে কেটেছিল কিছুটা সময়। মাঙ্কি ট্রেইলে হাঁটা, বানরের ছবি তোলা, পানীয় জলের পুকুরের মাঝখানের বিশ্রামাগারে কেউ কেউ ছবি তুলতেও গিয়েছিল... এইতো! তারপর আবার ছোট নৌকায় করে লঞ্চে উঠলাম। সেদিন বেশিরভাগেরই পুরো বিকেলটা কেটেছিল লম্বা ঘুমে! রাতে বার-বি-কিউ পার্টি ছিল, ছোটখাটো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও করেছিলাম সবাই মিলে। একে একে গান শোনালো সবাই। সুন্দরবনের ট্যুরিস্ট গাইড সুন্দর আলীর কণ্ঠে ‘সুন্দরবন’ শিরোনামের গানটিই সবচেয়ে বেশি হাততালি পেয়েছিল!
সুন্দরবনে কাটানো এই চারদিনে সবচেয়ে সুন্দর দিনটি ছিল তৃতীয় দিনটি। আগের রাতেই বলে দেয়া হয়েছিল, ভোর ছয়টার মধ্যে রওনা দেয়া হবে কটকা সমুদ্র সৈকতের উদ্দেশ্যে। কিন্তু রাতভর আড্ডার কারণে সকালে বিশ মিনিট সময় মাশুল দিতে হলো। তাতে কারো আফসোস নেই। লঞ্চ থেকে ছোট নৌকায় দশ মিনিটেই আমরা পৌঁছে গেলাম কটকায়। সমুদ্র সৈকতের আগে বনটাই দেখা হয়েছিল আমাদের। পা রাখতেই দেখা মিলল অসংখ্য চিত্রল হরিণের। দুটা হরিণের বুকে বুকে মেলানো দেখে মনে পড়ে গেল ‘মাশরাফি-তাসকিনের’ সেই ছবিটার কথা! লাফ দিয়ে খেলার মাঠের দুই বাঘের বুকে মেলানোর ছবিটা আমার টেবিলে এখনো আছে। ক্যামেরাটা বের করে এবার হরিণেরটা তুললাম, সেটাও এখন ওই ছবির পাশে শোভা পাচ্ছে!
কটকার এমন দৃশ্য নজর কাড়ে যে কারো
কটকার বন কার্যালয়ের পেছন দিক থেকে সোজা পশ্চিমমুখী কাঠের তৈরি ট্রেইলের শেষ মাথায় হাতের ডানেই টাইগার টিলা। এখানেই দেখতে পেলাম বাঘের পায়ের অসংখ্য ছাপ। গাইড জানালো, বাঘের আনাগোনার কারণেই জায়গাটির এমন নামকরণ। টাইগার টিলা থেকে সামান্য পশ্চিমে বয়ার খাল। দুইপাশে কেওড়া, গোলপাতা আর নানান পাখির কলকাকলিতে মুখর থাকে জায়গাটি। এছাড়া কটকার জেটির উত্তরে খালের চরজুড়ে থাকা কেওড়ার বনেও দেখা মেলে দলবদ্ধ চিত্রা হরিণ, বানর আর শূকরের।
সবশেষে গেলাম সমুদ্র সৈকতে। তখনই মাথার ওপর থেকে সোনালী রোদ কেটে গেল। অন্যদিকে পুরো সমুদ্র সৈকত জুড়ে যেন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সাদা সাদা ‘মুক্তার’ দানা। লাল কাঁকড়া আর কালো ঝিনুকেরও দেখা মিলেছে, তবে সাদাগুলো চোখে পড়ছিল বেশি। পানির ছোট ছোট ঢেউ আছড়ে পড়ছে পাড়ে। যত এগুতে থাকবেন, দেখবেন একদিকে ছোট গাছের ঝোপঝাড়, অন্যদিকে ছোটবড় অনেক গাছ উপড়ে পড়ে আছে, কাঠগুলো নরম হয়ে গেছে, কিছু গাছ শুধু দাঁড়িয়ে আছে, পাতা নেই, কাণ্ড নেই, জীবন নেই। দেখেই বুঝতে পারবেন এসব সিডরেরই স্মৃতিচিহ্ন। একপাশে গাছে শেকড়, আরেকপাশে সমুদ্র মাঝখানে আমরা দাঁড়িয়ে ‘মুক্তার’ চাদরের মধ্যে। শুধু দু’জন আমাদের চেয়ে খানিকটা আলাদা ছিল। তারা একে অন্যের হাত ধরে দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছিল বঙ্গোপসাগরের পানিতে। দেখতে কিন্তু ভালোই লাগছিল!
কটকা সৈকতজুড়ে যেন মুক্তার গালিচা
খুব কম সময়েই প্রকৃতি তার ভোল পাল্টালো, মাথার ওপর পড়তে থাকলো গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। আমরাও ততক্ষণে নৌকায় চেপে বসলাম। পরের গন্তব্য জামতলা সৈকত। আগেই জেনেছিলাম নৌকা থেকে নেমে সৈকতে পৌঁছাতে আধা ঘণ্টারও বেশি সময় ট্রেকিং করতে হয়। ছোট খাল দিয়ে ঢুকতেই প্রকৃতি আবারও ভোল পাল্টালো, তীব্র রোদ। কেউ গামছা, কেউ ছাতা মাথায় দিয়ে ট্রেকিং শুরু করলাম বনের ভেতর দিয়ে। সামনে পেছনে বন্দুকধারী গাইড। ‘ভাগ্যে থাকলে বাঘ দেখবেন’ গাইড সুন্দর আলী জানাল। আমরা বাঘ দেখার উদ্দেশ্যে নয়, প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যকে মনের মধ্যে গেঁথে রাখার চেষ্টায় থাকলাম। আমার মনের মধ্যে এটাই ছিল ‘বাঘ দেখলেই বোনাস’!
পথে পথে একজন বললো, ‘এ সৈকত বুনো সুন্দরী’। আসলেই সত্য। প্রায় তিন কিলোমিটার ঘন সুন্দরী, গেওয়া, গরান, এবং কেওড়ার বন পেরিয়ে সৈকতে যেতে হয়ে। জামতলা সমুদ্র সৈকতের পথে শুধু ম্যানগ্রোভ বন নয়, ফার্নের ঝোঁপও পাড়ি দিতে হয় খানিকটা। পথে একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ারও আছে। এই রাস্তাতেই হরিণ পালদের বিচরণ, শুকরের ছোটাছুটি ,বানরের কারসাজি, বাঘের হরিণ শিকার কিংবা রাজকীয় ভঙ্গিতে বাঘের চলাচল। এসব দৃশ্য দেশ-বিদেশের পর্যটকদের ভীষণভাবে আকৃষ্ট করে।
জামতলা সৈকত
কিছুক্ষণ হাঁটার পর শুনতে পেলাম সমুদ্রের গর্জন! জামতলা সৈকত চোখে পড়তে দেরি, কিন্তু ব্যাগ রেখে নামতে দেরি নেই! একে একে নেমে পড়লো সবাই। এখানকার পানি খুব বেশি স্বচ্ছ নয়। তবে এই সৈকতের স্বকীয়তা হলো কালো বালির চাকচিক্য! দুপুরের সূর্য সরাসরি এই বালিতে পড়ে পুরো সৈকতকেই সৌন্দর্য দিয়েছে। কোথাও কোথাও দেখা যায় জোয়ারের ঢেউয়ে ধুয়ে যাওয়া সমুদ্র সৈকত।
সুন্দবনের শরণখোলা রেঞ্জের জনপ্রিয় একটি জায়গা হলো ডিমের চর। তৃতীয় দিনের শেষ ঘোরার জায়গা এটিই। দুপুরের খাবার খেয়েই ট্রলারে করে বিশ মিনিটে পৌঁছে গেলাম ডিমের চর। এই সৈকতটি নির্জন এবং পরিচ্ছন্ন। বেলাভূমি জুড়ে শুধুই দেখা যায় কাঁকড়াদের শিল্পকর্ম। অন্যপাশে বিশাল কাশবন। দেখে একজন তো বলেই ফেললো, উত্তরা দিয়াবাড়ির চেয়ে কাশবনটি আরো বড়। আমাদের কেউ সমুদ্রে দাঁড়িয়ে খোশগল্প করতে লাগলো, কেউ কেউ কাশফুলের মাঝে ডুব দিয়েছে। আমি দ্বিধায় পড়লাম, কোনটাতে যাব প্রথমে কাশবন না সৈকতে!
ডিমের চরে সূর্যাস্ত
সন্ধ্যায় আমরা বিচিত্র এক আকাশ দেখলাম। সূর্য যেন সাত রঙের মতো ছড়িয়ে পড়েছে আকাশে। এমন রূপে সবাই মুগ্ধ। না হওয়ার উপায় কি, আমার জীবনে এরকম আকাশ প্রথমই দেখেছি; এতটাই অদ্ভুত। ধীরে ধীরে আকাশটা চাঁদের দখলে গেল। ওপাশের বন থেকে ভেসে আসতে থাকলো নানা পশু-পাখির আওয়াজ। অন্যদিকে লাখ কোটি জোনাকীর আলোর মেলা আর আকাশের অসংখ্য তারা। এসব দেখতে দেখতে মুগ্ধ ও বিমোহিত হলাম। কোনো কথা না বলে চুপচাপ হাঁটতে থাকলাম সমুদ্রের তীর ঘেঁষে। একটু দূরে সুন্দর আলী ভাই গান ধরেছেন, ‘ওরে সুন্দরবন, তুমি মায়েরই মতন...’।
- গরমে মাথা ঘোরা ও অজ্ঞান হওয়ার কারণ কী হতে পারে?
- এই গরমে চুল পড়া বন্ধ করতে
- আম মুরগির ঝোল
- কমলো পেঁয়াজের দাম
- জ্বালানি তেল খালাসে আসছে যুগান্তকারি পরিবর্তন
- মিল্টন সমাদ্দারের স্ত্রী ডিবিতে
- ঝালকাঠিতে জমজমাট নির্বাচনী প্রচারণা
- ট্রেন সার্ভিসের মাধ্যমে রাজধানীর চাপ কমে আসবে: চিফ হুইপ
- মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের বিরত রাখা দলের নীতিগত সিদ্ধান্ত : কাদের
- রেকর্ড সংখ্যক হাজির সমাগমের প্রস্তুতি নিচ্ছে সৌদি
- তীব্র গরমে মরে যাচ্ছে মুরগি, কমেছে ডিম ও মাংসের উৎপাদন
- এবার স্মার্টওয়াচেই পাবেন এআই ফিচার
- ঢাকা সেনানিবাসে এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
- বিশ্রামে শাহরুখ, ফিরবেন কবে?
- যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাব মানবে না হামাস
- উজিরপুরে সরকারী তালিকাভুক্ত জেলেদের মাঝে উপকরণ বিতরণ
- নগরীর শেরে বাংলা সড়কের পুনঃনির্মাণ কাজের উদ্বোধন
- র্যাপিড পাসে পরিশোধ হবে সব গণপরিবহনের ভাড়া
- আরও পাঁচ হাসপাতালে পরমাণু চিকিৎসাসেবা
- খুলনায় লবণাক্ত জমিতে বছরজুড়েই ফলছে ফসল
- প্রবাসে এনআইডি করতে বাধ্যতামূলকভাবে দিতে হবে রঙিন ছবি
- লবণ-চিনি মিশিয়ে নকল ওরস্যালাইন বানাচ্ছিলেন তারা
- ফ্ল্যাটের ভুয়া দলিল দেখিয়ে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ নেন তারা
- অশোক রায় নন্দীর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
- বাংলাদেশের সঙ্গে ভিসা অব্যাহতি ও বাণিজ্য সম্প্রসারণে রাজি মিশর
- শাহজালালে ৩ ঘণ্টা করে বন্ধ থাকবে ফ্লাইট ওঠানামা
- পরিবেশ সাংবাদিকতার সুরক্ষায় প্রতিষ্ঠানিক উদ্যোগ নেয়া হবে
- অর্থমন্ত্রী আইডিবির সভায় অংশগ্রহণ ও সৌদি প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক
- ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের শঙ্কা, নদীবন্দরে হুঁশিয়ারি
- কাশ্মীরে সেনাবাহিনীর গাড়িবহরে জঙ্গি হামলা, নিহত ১
- রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে গেছে কি না বুঝবেন যে লক্ষণে
- হিট স্ট্রোক এড়াতে কীভাবে সতর্ক থাকবেন?
- গলাচিপায় অসহায় ও দুস্থদের মাঝে ভিজিএফের চাল বিতরণ
- বরগুনায় মা ও মেয়ে ধর্ষণের পলাতক আসামী গ্রেফতার
- প্রস্রাবের যে সমস্যা মূত্রথলির রোগের লক্ষণ
- গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অবহেলা করলে হতে পারে যে গুরুতর রোগ
- পদ্মা সেতুতে দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি টোল আদায়
- ব্রাজিলকে সরাসরি তৈরি পোশাক নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
- হুপিং কাশিতে আক্রান্ত কি না বুঝবেন যে লক্ষণে
- নিষেধাজ্ঞায় অভয়াশ্রমে মাছ শিকার ১৪ জেলের কারাদন্ড
- কলাপাড়ায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড
- প্রচণ্ড জ্বর ও গায়ে ব্যথায় ভুগছেন, ম্যালেরিয়ার লক্ষণ নয় তো?
- বেশিক্ষণ রোদে থাকলে যে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে
- গরমে অতিরিক্ত ঘাম হওয়া কি বিপদের লক্ষণ?
- শুধু হিট স্ট্রোক নয়, তাপপ্রবাহে কঠিন যে রোগের ঝুঁকি বাড়ে
- আল্লাহর অসীম ক্ষমতার নিদর্শন
- ছুটিতে সরকারি হাসপাতালের সেবায় সন্তুষ্ট স্বাস্থ্যমন্ত্রী
- খুলে দেওয়া হলো ৮ ওভারপাস দুই সেতু
- ঝালকাঠিতে নার্সদের ব্যাজ ও শিরাবরণ অনুষ্ঠিত
- এসির বাতাসে বাড়ছে ঠাণ্ডা-কাশি, ঘরোয়া উপায়ে সমাধান