• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের পটুয়াখালী
ব্রেকিং:
যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

বইফেরীওয়ালা প্রধানমন্ত্রীকে শোনাতে চান বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখাকবিতা

আজকের পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ৫ ডিসেম্বর ২০১৮  

পথ থেকে প্রান্তরে হাটে বাজারে হেটে হেটে ৬২ বছর ধরে বই বিক্রি করছেন গীতিকবি আবদুল হালিম। বয়েসের ভাড়ে নুয়ে পড়লেও থেমে নেই তার পথচলা। চোখের জ্যোতি কিছুটা কমে এলেও এখনও লাঠি ছাড়িা হেটে চলেন মাইলের পর মাইল। ৮২ বছরের এ অদম্য মানুষটি এখনো গ্রাম থেকে শহরের হাটে বাজারে হেটে হেটে বিক্রি করছেন স্বরচিত গীতি কবিতা ছাড়াও ধর্মীয় এবং শিশুতোষ বই। নিজ কন্ঠে সুরের ছন্দ তুলে বই বিক্রি করেই এখনো চলছে জীবন জীবিকা। খুঁজে পান মানসিক প্রশান্তি।  
পটুয়াখালীর সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের আউলিয়াপুর গ্রামের মৃত্যু আবদুর রহমান গাজীর ছেলে কবি আবদুল হালিম। ক্লাশ ফাইভ পাশ করার পরে মক্তব্যের শিক্ষক গীতিকবি আবদুল মান্নানের অনুপ্রেরনায় শুরু করেন তার লেখা বই বিক্রি। তখন থেকেই শিক্ষা গুরুকে অনুসরন করে নিজেই লেখা শুরু করেন গীতি কবিতা, গান, আঞ্চলিক ভাষার ছড়া। মক্তব্য শিক্ষক গীতিকবি আবদুল মান্নানের উৎসাহে তার সাথে একত্রে গান, কবিতা ও ছড়া মিলিয়ে প্রকাশিত হয় প্রথম বই। গ্রামগঞ্জ থেকে শহরের হাটে বাজারে পায়ে হেটে বিক্রি করেন নিজেই।
পাঠকের আগ্রহেই এরপর শুরু করেন এককভাবে লেখা প্রকাশের কাজ। সমসাময়িক আলোচিত ঘটনা ছাড়াও পাঠকের চাহিদার বিবেচনায় লিখতে শুরু করেন একের পর এক গীতিকবিতা। স্বাধীনতার ইতিহাস, সাত খুনির ফাঁসি, এরশাদ শিকদের ফাঁসি, শহার ভানুর স্বামী উদ্ধার, আবদুল আলী গারুলি ও নিবারুনের করুন কাহিনীসহ এমন সব ঘটনার প্রায় শতাধিক বই তিনি রচনা করেছেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জীবনি, ১৫ই আগস্টের মর্মান্তিক হত্যাকান্ডসসহ এবং তার তনয়া শেখ হাসিনাকে নিয়েও লিখেছেন বেশ কয়েকটি গীতি কবিতার বই।
তিনি জানান, পত্রিকা কিনে পড়তাম। পাঠকের আগ্রহকে গুরুত্ব দিয়ে সে সমব ঘটনার উপড় লিতাম। অনেক সময় টাকা থাকতনা। ধার দেণা করতাম। না পেলে ছাপাখানার মালিককে ধরে সে সব ছাপাতাম। এই বই বিক্রি করেই টানাপোড়নেই ৬২ বছর ধরে চালিয়েছেন পরিবারের ভরন-পোষন। সন্তানদের লেখাপড়া। বড় ছেলে মতিউর রহমান মাওলানা পাশ করে স্থানীয় একটি নুরানী মাদ্রাসায় চাকুরি করছেন। মেয়ে কাজল রেখা পরিবার পরিকল্পনায় চাকুরী করছে। ছোট ছেলে আনিসুর রহমান পটুয়াখালী সরকারী কলেজে (বিএ) লেখাপড়া করছেন।
আবদুল হালিম আরও জানান, এত সব কিছু সম্ভব হতনা যদি তার জীবনসঙ্গী তাকে সহায়তা না করত। উৎসাহ না যোগাত। অনেকটা আক্ষেপ করেই বলেন, এখন আর আগের মত তার গীতি কবিতার বই বিক্রি হয় না। টেলিভিশন আর মোবাইলে গ্রামের মানুষও সব খবর জেনে যায়। তাই বাধ্য হয়ে এখন দেশের নামকরা সাহিত্যিক ও কবিদের লেখা বইও বিক্রি করছেন। শিশুদের আদর্শ লিপি ছাড়াও বিভিন্ন ধর্মীয় বই বিক্রি করছেন।
কবি আবদুল হালিমের ছোট ছেলে আনিসুর রহমান বলেন, গভীর রাত অবধি বই লেখেন বাবা। সুরে সুরে মোহিত করেন আমাদের। বইগুলো গ্রামে গ্রামে ঘুরে পরিশ্রম করে বিক্রি করেন। আমার বাবাকে নিয়ে আমরা গর্ব করি। বই ক্রেতা আজিজ আহমেদ বলেন, সেই ছোট বেলা থেকেই আবদুল হালিমকে কলাপাড়াসহ বিভিন্ন হাটে বই বিক্রি করতে দেখছি। সমসাময়িক ঘটনার উপড় তার লেখা অনেক কবিতার বই কিনে পড়েছি।   
জীবনের শেষ ইচ্ছের কথা জানাতে গিয়ে আবদুল হালিমের চোখে বেয়ে নেমে আশে জল। বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জাতির পিতাকে নিয়ে একটি গীতি কবিতা লিখেছিলাম। ওই গানটি যদি শেখ হাসিনাকে শোনাতে পারতাম তাহলে মনে হয় মরে গিয়েও শান্তি পেতাম।
আউলিয়াপুর ইউপি সদস্য আলতাফ হোসেন ভুট্যু বলেন, কবি আবদুল হালিম একজন গুনী ব্যক্তি। ছোট বেলা থেকেই দেখছি তিনি গীতি কবিতা ছাড়াও বাচ্চাদের জন্য ছড়া, কবিতা, গান ও গল্পের বই লিখেছেন। হাটে বাজারে ঘুরে ঘুরে এসব বই বিক্রি করছেন। ছোট বেলায় আবসর সময়ে তার কাছে ছুটে যেতাম। তার গলায় ছন্দ সুরে শুনতাম কবিতা।