• সোমবার ০৬ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

  • || ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের পটুয়াখালী
ব্রেকিং:
সেনাবাহিনীকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের আস্থা অর্জন করেছে ঢাকা সেনানিবাসে এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে? যে ২৫ জেলায় আজ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী ‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা

দেশেই সুরক্ষিত থাকছে তথ্য, বছরে সাশ্রয় ৩৫৩ কোটি

আজকের পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ৮ নভেম্বর ২০২১  

বাংলাদেশে গড়ে উঠেছে জাতীয় ডাটা সেন্টার বা তথ্যভাণ্ডার, যা পৃথিবীর সপ্তম বৃহত্তম ডাটা সেন্টার হিসেবে বিশ্বে স্বীকৃতি পেয়েছে। বাংলাদেশ ডাটা সেন্টার কোম্পানি লিমিটেড (বিডিসিসিএল) নামে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে গড়ে উঠেছে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ এ ডাটা সেন্টার।

বাংলাদেশের নেওয়া উদ্যোগে বিদেশিরাও তাদের তথ্যভাণ্ডার সংরক্ষণের জন্য আগ্রহ দেখাচ্ছে। বিদেশি বেশ কয়েকটি বড় কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হবে। তবে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী এখনই তা প্রকাশ করতে পারছি না।

প্রকৃতি ও প্রযুক্তির মেলবন্ধনে এসব ভবনে নিরাপদে গচ্ছিত কয়েক কোটি মানুষের ডাটা বা তথ্য। বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) থেকে শুরু করে সরকারি অফিস ও অধিদপ্তরের সব তথ্য প্রযুক্তির কঠিন ধাপ মেনে এখানে সংরক্ষণ করা হচ্ছে।

জাতীয় ডাটা সেন্টার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় এক হাজার ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি করা এ ডাটা সেন্টার বছরে সরকারের ৩৫৩ কোটি টাকা সাশ্রয় করছে। দেশের তথ্য রাখা যাচ্ছে দেশেই। প্রায় সাত একর জমির ওপর ক্লাউড কম্পিউটিং ও জি-ক্লাউড প্রযুক্তিতে আপটাইম ইনস্টিটিউট কর্তৃক সার্টিফাইড ‘টিয়ার ফোর-আইভি’ জাতীয় ডাটা সেন্টার’ এর নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০১৯ সালের জুনে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আপটাইম ইনস্টিটিউট থেকে টায়ার সার্টিফিকেশন অব অপারেশনাল সাসটেইনেবিলিটির সনদ অনুযায়ী এটি বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তর ডাটা সেন্টার। এটি টিয়ার ফোর গোল্ড ফল্ট টলারেন্ট ডেটা সেন্টার হিসেবে তৈরি করা হয়েছে।

জানা গেছে, এ ডাটা সেন্টারে ৪৬ হাজার ৫০০টি সরকারি অফিস যুক্ত রয়েছে। প্রতিমাসে নয় কোটি নাগরিক এ বাতায়ন থেকে তথ্য ও সেবা গ্রহণ করছেন। ছয় শতাধিক ই-সেবা সংযুক্ত এখানে। এক হাজার ৭০২ ধরনের সেবার ফর্ম সংযোজন আছে। এছাড়া সাড়ে ৪৬ হাজার সরকারি ওয়েবসাইট ও প্রায় ৫০ লাখ কনটেন্ট রয়েছে।

মায়ের কোলে সন্তান যেমন নিরাপদ, তেমনি এখানেও ডাটা থাকলে নিরাপদ। এখান থেকে ডাটা চুরি, হ্যাকিং ও অন্য কেউ নিতে পারবে না। বিশেষ করে আমরা এসব ডাটা অন্য কারোর সঙ্গে শেয়ার করি না, করার নিয়মও নেই। এটাকে আমরা বলি নিরাপদ তথ্য সেবা।

ডাটা সেন্টারে ৫৮টি মন্ত্রণালয় বা বিভাগের ই-নথি রয়েছে। অধিদপ্তর বা পরিদপ্তরের রয়েছে ৬৫টি। ডাটা সংরক্ষণ করা দপ্তর বা সংস্থার সংখ্যা ৪৫৩টি। এছাড়া বিভাগীয় পর্যায়ের ১১৫টি অফিসের ডাটা রয়েছে এখানে। জেলা পর্যায়ের দুই হাজার ৬৯৩টি এবং উপজেলা পর্যায়ের তিন হাজার ৫৩টি অফিসের ডাটা সংরক্ষিত রয়েছে এ সেন্টারে। এছাড়া অন্যান্য (আঞ্চলিক/সার্কেল/জোনাল) অফিসের ই-নথি রয়েছে ২৭৫টি। মোট ছয় হাজার ৭১২টি অফিসের ই-নথি রয়েছে এ সেন্টারে।

মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ই-নথি ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২০ হাজার ১৩৪ জন। মোট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৭২ হাজার ৫৬৫। এছাড়া দুই লাখ ই-মেইল ব্যবহারকারী রয়েছে।

বিডিসিসিএল চেয়ারম্যান ও আইসিটি ডিভিশনের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম বলেন, ‘এ ডাটা সেন্টারের ডাউন টাইম শূন্যের কোটায়। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান আপটাইম ইনস্টিটিউট বিশ্বব্যাপী ডাটা সেন্টার স্থাপন ও পরিচালনা পদ্ধতি পরীক্ষার মাধ্যমে সনদ প্রদান করে থাকে। তারা আমাদের এ ডাটা সেন্টারটির ধারণ ক্ষমতা, ডিজাইন, নিরাপত্তা, নির্ভরযোগ্যতা ও অন্যান্য গুণগত মান পরীক্ষা করে টিয়ার ফোর সনদ দিয়েছে।’

বিডিসিসিএলের কোম্পানি সেক্রেটারি এ কে এম লতিফুল কবির বলেন, ‘দুই লাখ স্কয়ার ফিটের এ ডাটা সেন্টারের মূল দ্বিতল ভবন, দুপাশে দুটি ইউটিলিটি ভবন এবং সম্মুখে একটি রিসেপশন ভবন; ডাটা সেন্টারের নিরবচ্ছিন্ন অপারেশন ও মেইনটেন্স নিশ্চিত করতে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগসহ সব গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে রিডাল্ডেন্সি। এছাড়া এখানে ক্লাউড কম্পিউটিং, ক্লাউড ডেক্সটপ, ক্লাউড স্টোরেজ, ডাটা স্টোরেজ ও ব্যাকআপ, ডাটা সিকিউরিটি ও কো-লোকেশন সার্ভিস রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অত্যন্ত সফলভাবে নির্মিত আন্তর্জাতিক মানের সর্বাধুনিক এ ডাটা সেন্টারটি ২০১৯ সালের ২৮ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন। ৯৯ দশমিক ৯৯৫ শতাংশ আপটাইম বিশিষ্ট এ ডাটা সেন্টার হতে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা সেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে প্রশিক্ষিত ও দক্ষ জনবল দ্বারা ডাটা সেন্টার পরিচালনার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।’

বিডিসিসিএল পরিচালক রকিব আহমদ বলেন, ‘মায়ের কোলে সন্তান যেমন নিরাপদ, তেমনি এখানেও ডাটা থাকলে নিরাপদ। এখান থেকে ডাটা চুরি, হ্যাকিং ও অন্য কেউ নিতে পারবে না। বিশেষ করে আমরা এসব ডাটা অন্য কারোর সঙ্গে শেয়ার করি না, করার নিয়মও নেই। এটাকে আমরা বলি নিরাপদ তথ্য সেবা।’

ডাটা সেন্টারটির তথ্য ধারণক্ষমতা দুই পেটাবাইট (১০ লাখ গিগাবাইটে ১ পেটাবাইট)। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং যৌথভাবে এ ডাটা সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। বাংলাদেশ সরকার এবং চীনের যৌথ অর্থায়ন ও কারিগরি সহায়তায় এ সেন্টার নির্মিত হচ্ছে।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় এখানে ডাটা রাখা সাশ্রয়ী হলেও গুগল, অ্যামাজন, ফেসবুকের মতো বড় কোম্পানিগুলো এখনও তাদের কাজ শুরু করেনি। এমনকি বাংলাদেশের কোনো বেসরকারি সংস্থা বা অফিসও এটি ব্যবহার করছে না।

এর কারণ জানতে চাইলে কোম্পানির ব্যবস্থাপক এ কে এম লতিফুল কবির বলেন, ‘বাংলাদেশের নেওয়া উদ্যোগে বিদেশিরাও তাদের তথ্যভাণ্ডার সংরক্ষণের জন্য আগ্রহ দেখাচ্ছে। বিদেশি বেশ কয়েকটি বড় কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হবে। তবে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী এখনই আমরা তা প্রকাশ করতে পারছি না।’

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সূত্র জানা গেছে, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের ঘোষণা ছিল। ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর ঘোষিত সেই নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার দেশের বিভিন্ন হাইটেক পার্ক, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, আইটি সেন্টার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

এছাড়া কম্পিউটার ল্যাব প্রতিষ্ঠা শুরু করে শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি ব্যবহারের মধ্য দিয়ে শিল্প হিসেবে প্রযুক্তিকে কীভাবে গড়ে তোলা যায়, তারও একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হাতে নেয় সরকার।