• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

আজকের পটুয়াখালী
ব্রেকিং:
ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আগামীকাল ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির আহতদের চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী টেকসই উন্নয়নের জন্য কার্যকর জনসংখ্যা ব্যবস্থাপনা চান প্রধানমন্ত্রী বিএনপি ক্ষমতায় এসে সব কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয় চমক রেখে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করল বাংলাদেশ শেখ হাসিনার তিন গুরুত্বপূর্ণ সফর: প্রস্তুতি নিচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের ভিসা অনুমোদনের সময় বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ এআইকে স্বাগত জানায় তবে অপব্যবহার রোধে পদক্ষেপ নিতে হবে ছেলেরা কেন কিশোর গ্যাংয়ে জড়াচ্ছে কারণ খুঁজে বের করার নির্দেশ প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন নতুন প্রজন্ম গড়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর এসএসসির ফল প্রকাশ, পাসের হার যত ছাত্রীদের চেয়ে ছাত্ররা পিছিয়ে, কারণ খুঁজতে বললেন প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর কাছে এসএসসির ফল হস্তান্তর জলাধার ঠিক রেখে স্থাপনা নির্মাণে প্রকৌশলীদের আহ্বান প্রধানমন্ত্রী দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে টেকসই কৌশল উদ্ভাবনের আহ্বান যে পরিকল্পনা হউক, সেটা পরিবেশবান্ধব হতে হবে : প্রধানমন্ত্রী তৃণমূল থেকে উন্নয়নই আওয়ামী লীগের মূল লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী

শ্রমিকলীগ সভাপতি জহির হত্যার পরিকল্পনাকারী শিবির নেতা!

আজকের পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ১৫ নভেম্বর ২০২১  

কক্সবাজারে জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম সিকদারকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ছাত্র শিবিরের সাবেক নেতা ইমাম খাইরকে গ্রেফতারের পর চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে র‌্যাব।

সংশ্লিষ্ট সূত্রটি জানিয়েছে, জহিরুল ইসলাম হত্যা মামলায় ইমাম খাইরকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার ব্যাপারে রহস্য উদঘাটনে তথ্য পাওয়া গেছে। এতে জহিরুলসহ তার পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ থাকা এক ব্যক্তির অর্থায়নে গ্রেফতার ইমাম খাইরের পরিকল্পনায় এই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে। আর ঘটনা বাস্তবায়নে তার (ইমাম খাইর) সঙ্গে কক্সবাজারের স্থানীয় এক সাংবাদিকসহ আরো কয়েকজন জড়িত ছিল। এরমধ্যে হত্যা পরিকল্পনাকারীদের কথোপকথনের কয়েকটি অডিও রেকর্ড র‌্যাবের হাতে এসেছে।

গত শনিবার র‌্যাবের একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সূত্রটির তথ্যমতে, শ্রমিক নেতা জহিরুল ইসলামের সঙ্গে ছাত্র শিবিরের সাবেক নেতা ইমাম খাইরের মধ্যে ব্যক্তিগত কোনো বিরোধ ছিল। কিন্তু জহিরুলের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ থাকা ব্যক্তির অর্থায়নকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ইমাম খাইরকে হত্যার ঘটনা বাস্তবায়ন করে।

নিহত জহিরুল ইসলাম সিকদার কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মুহুরী পাড়ার মৃত জামাল আহমদ সিকদারের ছেলে এবং জাতীয় শ্রমিক লীগ কক্সবাজার জেলার সভাপতি ছিলেন।

ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে কক্সবাজার শহরের চাল বাজার এলাকা থেকে ইমাম খাইরকে গ্রেফতার করে র‌্যাবের একটি দল। ইমাম খাইর কক্সবাজারের নবগঠিত ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের নতুন অফিস ফুলছড়ি এলাকার ফরিদুল আলমের ছেলে। তিনি ছাত্র শিবিরের কক্সবাজার সরকারি কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার শহর শাখার সভাপতি ছিলেন।

ইমাম খাইরকে গ্রেফতারের পর সাংবাদিকদের র‌্যাব জানিয়েছিল, জহিরুলের চাঞ্চল্যকর হত্যার ঘটনার পর থেকে তৎপরতা শুরু করে র‌্যাব। পরে গোপন খবরে কক্সবাজার শহরের চাল বাজার এলাকার একটি ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে ইমাম খাইরকে গ্রেফতার করা হয়। জহিরুল ইসলাম হত্যার পরিকল্পনা ও হত্যাকাণ্ডে ইমাম খাইর সরাসরি অংশগ্রহণ করে। 

গত ৫ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০টায় কক্সবাজার সদরের লিংকরোড স্টেশনে ঝিলংজা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও তার ছোট ভাই কুদরত উল্লাহ সিকদারের ব্যক্তিগত অফিসে অবস্থান করছিলেন। তারা দুই ভাইসহ কর্মী-সমর্থকরা মিলে নির্বাচনী আলাপ করছিলেন।

এ সময় একদল লোক মোটরসাইকেলে এসে তাদের গুলি করে এবং কুপিয়ে পালিয়ে যায়। এতে তিনজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে স্থানীয়রা তাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। কুদরত উল্লাহ’র অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ওই দিন রাতেই তাকে চট্টগ্রাম পাঠানো হয়। শনিবার সকালে জহিরুল ইসলামের অবস্থাও আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকেও চট্টগ্রাম পাঠানো হয় এবং সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। কুদরত উল্লাহ সিকদার ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৪ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে জয় পেয়েছেন।

নিহতের স্বজনদের অভিযোগ ছিল, ইউপি নির্বাচনে স্থানীয় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী লিয়াকত আলীর নেতৃত্বে দুর্বৃত্তরা এ হামলা চালিয়েছে।

এ ঘটনায় গত ৯ নভেম্বর হামলায় আহত কুদরত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে ২১ জনকে আসামি করে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।

গ্রেফতার ইমাম খাইরকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যমতে, জহিরুল ও কুদরতের সঙ্গে এলাকার স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। সম্প্রতি তাদের মধ্যে বিরোধ চরম আকার ধারণ করে। অন্যদিকে কুদরত উল্লাহ ইউপি নির্বাচনে সদস্য পদে প্রার্থী হওয়ার সুযোগকে কাজে লাগায় বিরোধী প্রতিপক্ষ। এতে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে হত্যার পরিকল্পনা নেয়া হয়। আর ওই প্রভাবশালী ব্যক্তির অর্থায়নে তৃতীয় একটি পক্ষকে ব্যবহার করা হয় জহিরুল ও কুদরতকে হত্যার।

পরিকল্পনা মতে, জহিরুল ও কুদরতের সঙ্গে বিরোধীয় ওই প্রভাবশালী ব্যক্তি ছাত্র শিবিরের সাবেক নেতা ইমাম খাইরের সঙ্গে আলাপ করেন। পরে ইমাম খাইরের পরিকল্পনায় হামলার জন্য ভাড়াটে খুনিদের দিয়ে হামলা চালানো হয়। হামলার সময় ইমাম খাইর ঘটনাস্থলের আশপাশে অবস্থান করে হামলাকারীদের দিক-নির্দেশনা দিচ্ছিলেন। শুধু তা-ই নয়, ইমাম খাইর হামলার ঘটনা সংঘটনে কক্সবাজারের স্থানীয় এক সাংবাদিকসহ আরো কয়েকজনকে ব্যবহার করেন।

এরমধ্যে হামলার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে ইমাম খাইরসহ তার সংঘবদ্ধ লোকজনের মধ্যে কথোপকথনের কয়েকটি অডিও রেকর্ড র‌্যাবের হাতে এসেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রটি দাবি করেছে।

এদিকে ইমাম খাইরকে গ্রেফতারের পর শুক্রবার ওই ঘটনায় তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে জানতে কক্সবাজারে স্থানীয় সাংবাদিকদের একটি দল র‌্যাব-১৫ এর ব্যাটালিয়ান দফতরে যান। এ সময় র‌্যাবের সংশ্লিষ্টরা ঘটনার ব্যাপারে সাংবাদিকদের বিস্তারিত তুলে ধরেন। এমনকি এসব সাংবাদিকদের ইমাম খাইরের সঙ্গে হত্যা পরিকল্পনায় থাকা লোকজনের মধ্যে কথোপকথনের জব্দ করা অডিও রেকর্ডও শুনিয়েছেন।

র‌্যাবের সঙ্গে আলাপ করতে যাওয়া স্থানীয় এক সাংবাদিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

কক্সবাজার সদর থানার ওসি শেখ মুনীর-উল-গীয়াস বলেন, শ্রমিক নেতা জহিরুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার ইমাম খাইরকে শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রোববার আদালতে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।