• সোমবার ০৬ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

  • || ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের পটুয়াখালী
ব্রেকিং:
সেনাবাহিনীকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের আস্থা অর্জন করেছে ঢাকা সেনানিবাসে এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে? যে ২৫ জেলায় আজ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী ‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা

যেসব শিষ্টাচার নারীকে অতুলনীয় করে তোলে

আজকের পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ২৯ নভেম্বর ২০২০  

ধনী-নিঃস্ব নারী-পুরুষ সবার জন্য অনন্য সব আদব বা শিষ্টাচার উপহার দিয়েছে ইসলাম। যে আদবসমূহের অনুসরণ অনুকরণ নারী-পুরুষ সবাইকে করে তোলে অনন্য। সুন্দর থেকে অতিসুন্দর। মানুষ হয়ে ওঠে যে কারো প্রিয়ভাজন ও স্বচ্ছ হৃদয়ের অধিকারী। এ আদব বা শিষ্টাচারগুলো নারীদের জন্য খুবই জরুরি। কেননা নারীদের থেকেই শিখবে জাতির ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।

মুসলিম নারীর জন্য যে গুণ বা শিষ্টাচারসমূহ নিজেদের জীবনে বাস্তবায়ন বা লালন করার আবশ্যকতা বেশি সে শিষ্টাচারসমূহ তুলে ধরা হলো, যা সত্যিই মুসলিম নারীকে করে তোলে অতুলনীয়। তাহলো-

- সালাম দেয়া
মুসলিম হিসেবে নিজেদের প্রথম পরিচয়ের মাধ্যমই হলো- পরস্পরের সালাম বিনিময়। সালামের মাধ্যমে পরিচয় প্রকাশ পায়। পরস্পরের জন্য দোয়া করা হয়। এ জন্য পরিচিত-অপরিচিত, ছোট-বড়, ধনী-গরিব, মালিক-অধীনস্থ একে অপরকে সালাম দেয়া। যেমনটি বলেছেন বিশ্বনবি- ‘তোমরা পরিচিত-অপরিচিত সবাইকে সালাম দাও।’ সব শিশুই বেশির ভাগ সময় নারীর মায়ের কাছ থেকে সালামের ব্যবহার শিখবে।

- সাবধান হওয়া
কোনো কারণে ঘর থেকে বের হওয়া কিংবা ঘরে প্রবেশের সময় স্বজোরে দরজা খোলা বা বন্ধ না করা। দরজা খোলা বা বন্ধ করার সময় দায়িত্বশীল ভূমিকাস্বরূপ সাবধনতা অবলম্বন করা। দরজা খোলা বা বন্ধ করার শব্দ যেন শিশু কিংবা বয়স্ক লোকের বিরক্তির কারণ না হয়। সব শিশুই নারীর (মায়ের) কাছ থেকে এ আদব শিখবে।

- বিরক্ত না করা
কোনো প্রয়োজনে কারো বাসায় গেলে বার বার দরজায় শব্দ না করা সর্বোত্তম। প্রয়োজন হলে ছোট আওয়াকে ধীরে ধীরে কড়া নাড়ানো কিংবা দরজায় সংকেত দেয়া। তবে বিষয়টি যেন এমন না হয় যে, তাতে ঘরের মালিকের বিরক্তির কারণ হয়ে না দাঁড়ায়।
দরজায় আওয়াজ দেয়ার ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে সর্বোচ্চ তিনবার আয়াজ দেয়া। তারপরও যদি কোনো প্রতিউত্তর না আসে তবে ফিরে যাওয়া। যা প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিস থেকে প্রমাণ পাওয়া যায়।

- উঁকি না মারা
কারো দরজায় গিয়ে ভেতরে কি হচ্ছে তা দেখতে বা জানতে উঁকি না দেয়া। এটি মারাত্মক অন্যায়। সরাসরি দরজার মুখোমুখি না দাঁড়িয়ে যে কোনো এক পাশে দাঁড়ানো। যাতে দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গেই অনিচ্ছা সত্ত্বেও ঘরের ভেতরে দৃষ্টি না পড়ে। এটাই ছিল বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদব। নারী যদি এ শিষ্টাচার নিজের মধ্যে লালন করতে পারে তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মও এ শিষ্টাচার লাভ করবে।

- জুতা সাজিয়ে রাখা
ঘরের ভেতর জুতা নেয়া সম্ভব না হলে তা দরজার বাইরে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা। কারো জুতার উপর কিংবা অগোছালোভাবে তা দরজার বাইরে না রাখা। জুতা সাজিয়ে রাখার মধ্যেই প্রকাশ পাবে ব্যক্তির সুন্দর ও উত্তম রুচিবোধ। মূলকথা হলো- যাতে ঘরের বাইরের কোনো ব্যক্তির দৃষ্টিতে অসুন্দর বা অগোছালো কোনো কিছু প্রকাশ না পায়।

- নম্র ও ভদ্র হওয়া
ঘরে প্রবেশের অনুমতি পাওয়ার পর তাতে ঢোকার সময় খুব নম্র ও ভদ্র স্বরে আওয়াজ দেয়া এবং নিজের দৃষ্টিকে নিচু রাখা। যেখানে বসার ব্যবস্থা করা হয় সেখানে বিনীতভাবে আসন গ্রহণ করাই উত্তম।

- নমনীয় হওয়া
কারো বাসায় গেলে আপ্যায়ন যাই করা হোক, তা সন্তুষ্টচিত্তে গ্রহণ করা। খাবারে যদি সমস্যা থাকে তা যতটা সম্ভব নিয়ন্ত্রণ করাও জরুরি। যাতে মেজবানকে বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে না হয়।

- অবজ্ঞা না করা
কল্যাণমূলক কোনো কাজ বা আদেশ-অনুরোধ উপক্ষো না করা। ইসলামি শরিয়তের মধ্যে থেকে যা পালন করা যায়, তা বিনয়ের সঙ্গে মেনে নেয়ায় উত্তম আদব বা শিষ্টচার। ঘরের মালিকের অনুপস্থিতিতে কোনো জিনিস-পত্র কিংবা কোনো দিকে না তাকানো বা দোষ না খোঁজাও উত্তম শিষ্টাচার।

- অসময়ে সাক্ষাৎ না করা
কারো সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করার ক্ষেত্রে সময়ের প্রতি লক্ষ্য রাখা জরুরি। কেননা মানুষ সব সময় এক রকম মেজাজে থাকে না। অসময়ে দেখা-সাক্ষাৎ করতে গেলে ভদ্রতার খাতিরে তাৎক্ষণিক কিছু না বললেও মন থেকে তা মেনে নেয়া কষ্টকার। এ কারণে খাওয়া, ঘুমানো, পারিবারিক অবসরের সময় কাউকে বিরক্ত না করাই উত্তম শিষ্টাচার। আর তা নারীদের জন্য খুবই জরুরি। পরিবার থেকেই এ শিক্ষা পায় মানুষ। যা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই কাজে লাগে।

- বিনয়ী হওয়া
জরুরি কিংবা সাধারণ যে কোনো কথা কা কাজের ব্যাপারে বিনয়ী হওয়া অতি উত্তম শিষ্টাচার। বিনয়ী হওয়ার কারণে অনেক সময় কঠিন ও জটিল কাজও সহজ হয়ে যায়। কাউকে দুঃখ প্রকাশ বা আনন্দ প্রকাশের ক্ষেত্রেও যেন বিনয়ীভাব থাকে। যা মানুষকে আপন থেকে আরও আপন করে তোলে। এটি হতে পারে নারীর জন্য সেরা শিষ্টাচার।

- উদার হওয়া
কারো আপত্তি শোনার ক্ষেত্রেও উদার হওয়া জরুরি। রুক্ষ বা ক্ষিপ্ত মেজাজে কারো ওজর শুনে সে রকম ভাব দেখালে আপন মানুষও ভুল বুঝে দূরে সরে যায়। মনের মধ্যে বৈরিতা তৈরি হয়। সুতরাং ওজর, আশা, আকাঙ্ক্ষা সব ক্ষেত্রে উদার হওয়া জরুরি।

- মেহমানের সম্মান করা
ঘরে মেহমানকে সম্মান করা। চাই সে গরিব কিংবা ধনী হোক। ধনীর সঙ্গে অতিরঞ্জন আর গরিবের সঙ্গে গা ছাড়া ভাব কোনোভাবেই কাম্য নয়। এক্ষেত্রে সবাইকে যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা দেয়াই উত্তম শিষ্টাচার।

- সুস্পষ্ট তথ্য দেয়া
মেহমানকে তার প্রয়োজনগুলোর ব্যাপারে জানিয়ে দেয়া জরুরি। থাকার রুম, ঘুমানোর স্থান, কোথায় পায়চারি করার স্থান, ওজু, গোসল, ইবাদত-বন্দেগি এমনকি জামা-কাপড়-জুতা কিংবা প্রয়োজনীয় জিনিস রাখা ইত্যাদি বিষয়ে তথ্য দেয়া জরুরি।

- হক আদায় করা
করো মেহমান হলে মেজবানের কিছু হক রয়েছে, যতক্ষণ মেহমান হিসেবে থাকবে ততক্ষণ তার সঙ্গে নম্র-ভত্র আচরণসহ যাবতীয় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে লক্ষ্য রাখা আবশ্যক। মেহমানকে কোনো বিষয়ে অতিরিক্ত চাপ না দেয়া। মেজবানের কাজের বা বিশ্রামের সময়ের প্রতি খেয়াল রাখাও শিষ্টাচার।

- খাবার ঢেকে রাখা
ঘরে কিংবা বাইরে যেখানেই অবস্থান করা হোক না কেন, খাবারের জিনিসগুলো সব সময় ঢেকে রাখা উত্তম। কাউকে পরিবেশন করার সময়ও তা ঢেকে রাখা। যাতে অযাচিত ধুলাবালি কীটপতঙ্গ না পড়ে এবং কারো সঙ্গে বাচ্চা থাকলেও যেন খাদ্য নষ্ট না করতে পারে সে দিকে লক্ষ্য রাখা।

- পর্দা মেনে চলা
উল্লেখিত সব ক্ষেত্রে কোনোভাবেই ইসলামি শরিয়ত লঙ্ঘন করে পর্দাহীন হওয়া যাবে না। কেননা নারী-পুরুষ সবার জন্যই পর্দা ফরজ। শুধুদ নারীই পর্দা মেনে চলবে আর পুরুষের জন্য পর্দা নেই। বিষয়টি যেন এমন না হয়। তবে নারী নিজেকে পর্দার সঙ্গে উত্তম আচরণ বা শিষ্টাচার প্রকাশ করা অতি উত্তম। যা নারীকে করে তুলবে অতুলনীয়। সময়ের পরিক্রমায় ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নারীকে দেখে দেখে এ উত্তম শিষ্টাচার শিখবে। উত্তম শিষ্টাচার প্রদর্শনে তারাও হয়ে উঠবে দক্ষ।

এমন আরও অসংখ্য আদব বা শিষ্টাচার রয়েছে, যা পালন করা সবার জন্য সর্বোত্তম। আল্লাহ তাআলার কাছে উত্তমি শিষ্টাচার দেখানো ব্যক্তিরাই পছন্দনীয়।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব নারী-পুরুষকে উত্তম শিষ্টাচার রক্ষা করার ও নিজেদের জীবনে তা যথাযথভাবে পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।