ব্যক্তি নয় জাতির স্বার্থে কাজ করার আহ্বান স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর

দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে ব্যক্তি স্বার্থের উর্ধ্বে উঠে দেশের তরে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। শুক্রবার (৫ আগস্ট) রাজধানীতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর অডিটোরিয়ামে শেখ কামালের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।

মন্ত্রী বলেন, পুরো জাতির উন্নয়ন না করে, শুধু ব্যক্তির উন্নয়ন করে দেশকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে নেওয়া যাবে না। সবার আগে আমরা এ দেশের নাগরিক। দেশের বাইরে ব্যক্তি নয়, দেশ দিয়ে উন্নয়নের মাপকাঠি করা হয়। এমন কিছু করা যাবে না, যাতে আগামী প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তাজুল ইসলাম বলেন, একসময় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ মুছে ফেলা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাপ্য সম্মান থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। যারা জীবন বাজি রেখে, সকল মায়া ত্যাগ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছেন, তাদের তিরস্কার করা হয়েছে।

‘স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে বিতর্ক তৈরির পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করেছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ সম্মান দিয়ে নানা সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।’

ইতিহাস বিকৃতির মাধ্যমে গোটা জাতিকে বিভক্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, জয় বাংলা স্বাধীনতার স্লোগান, বাংলাদেশের জন্মের স্লোগান। এই স্লোগানকে অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। যারা বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে অস্বীকার করে, তারা জয় বাংলা বুকে ধারণ করে না।

‘এই গোষ্ঠী দেশের স্বাধীনতাকে কখনোই মনেপ্রাণে মেনে নেবে না, এটাই স্বাভাবিক। এরাই দেশে বসে স্বাধীনতার বিরোধিতা করে। যারা দেশে অরাজকতা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করবে, তাদের তো স্যালুট দেওয়া যাবে না। তাদের সাথে কখনো বন্ধুত্ব হতে পারে না।’

‘এ দেশের মানুষের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য জাতির পিতা সারাজীবন লড়াই-সংগ্রাম ও আন্দোলন করেছেন। বঙ্গবন্ধু মানুষকে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসতেন। তার চিন্তা-চেতনায় ছিলো মানুষের কল্যাণ। একইভাবে তার সন্তানরাও সেই মানসিকতা নিয়ে বড় হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও কার্যক্রম সেটাই প্রমাণ করে। বঙ্গবন্ধুর পরিবারের কাছে বাঙালি জাতি আজীবন কৃতজ্ঞ।’

‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যারা ক্ষমতায় এসেছিলো, তারা এদেশের মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন করতে পারেনি। দেশকে ভিক্ষুক আর মিসকিনের জাতিতে রুপান্তরিত করেছে তারা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে দেশকে দারিদ্র্যের কষাঘাত থেকে মুক্তি দিতে সক্ষম হয়েছেন। সকল খাতে আজ অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে।’

‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল বহু প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের আধুনিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পথিকৃৎ। নতুন প্রজন্মের কাছে শেখ কামাল অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন।’

শুক্রবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন মো. তাজুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য। এতে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রধান প্রকৌশলী সেখ মোহাম্মদ মহসীন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইফুর রহমান এবং স্থানীয় সরকার বিভাগ ও এর আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তর বা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

এর আগে, সকালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বনানী কবরস্থানে শেখ কামালের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় বঙ্গবন্ধুসহ সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করেন তিনি।