• সোমবার ২০ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১১ জ্বিলকদ ১৪৪৫

আজকের পটুয়াখালী
ব্রেকিং:
চাকরির পেছনে না ছুটে যুবকদের উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান ‘সামান্য কেমিক্যালের পয়সা বাঁচাতে দেশের সর্বনাশ করবেন না’ ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আগামীকাল ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির আহতদের চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী টেকসই উন্নয়নের জন্য কার্যকর জনসংখ্যা ব্যবস্থাপনা চান প্রধানমন্ত্রী বিএনপি ক্ষমতায় এসে সব কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয় চমক রেখে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করল বাংলাদেশ শেখ হাসিনার তিন গুরুত্বপূর্ণ সফর: প্রস্তুতি নিচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের ভিসা অনুমোদনের সময় বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ এআইকে স্বাগত জানায় তবে অপব্যবহার রোধে পদক্ষেপ নিতে হবে ছেলেরা কেন কিশোর গ্যাংয়ে জড়াচ্ছে কারণ খুঁজে বের করার নির্দেশ প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন নতুন প্রজন্ম গড়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর এসএসসির ফল প্রকাশ, পাসের হার যত ছাত্রীদের চেয়ে ছাত্ররা পিছিয়ে, কারণ খুঁজতে বললেন প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর কাছে এসএসসির ফল হস্তান্তর জলাধার ঠিক রেখে স্থাপনা নির্মাণে প্রকৌশলীদের আহ্বান প্রধানমন্ত্রী দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে টেকসই কৌশল উদ্ভাবনের আহ্বান

ফুসফুস ভালো রাখার উপায়

আজকের পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ৮ জানুয়ারি ২০১৯  

শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ফুসফুস।ধূমপান না করা, ব্যায়াম করা, বায়ুদূষণ এড়িয়ে যাওয়া ইত্যাদি ফসুফুসকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে। তবে এর পাশাপাশি কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো খাদ্যতালিকায় থাকলে ফুসফুস ভালো থাকে। স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথ ডটকম জানিয়েছে এসব খাবারের নাম।

১. আপেল: আপেল খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। যুক্তরাজ্যের এক গবেষণায় বলা হয়, সপ্তাহে যারা দুটি থেকে পাঁচটি আপেল খায়, তাদের অ্যাজমা হওয়ার ঝুঁকি ৩২ ভাগ কমে যায়। আপেলের মধ্যে রয়েছে ফ্লাবোনয়েড। এটি শ্বাস নেওয়ার পথকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে, ফুসফুসকে ভালো রাখে।

২. গাজর: গাজর বিটা ক্যারোটিন এবং অন্যান্য অ্যান্টি অক্সিডেন্টের জন্য প্রসিদ্ধ। গবেষণায় বলা হয়, বিটা ক্যারোটিন শরীরে গিয়ে ভিটামিন ‘এ’ তে রূপান্তরিত হয়। ফুসফুস ভালো রাখতে গাজর একটি চমৎকার খাবার।

৩. কফি: কতটুকু পরিমাণ কফি পান শরীরের জন্য ভালো- এ নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। তবে কফি কিন্তু ফুসফুস ভালো রাখতে সাহায্য করে, বিশেষ করে ব্ল্যাক কফি। কফি পানের চার ঘণ্টা পর শ্বাসতন্ত্রের কার্যক্রম আরো ভালো হয়। তাই ফুসফুস সুরক্ষিত রাখতে এই কফি পান করতে পারেন।

৪. রসুন: রসুনের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্লামেটোরি উপাদান। দীর্ঘকাল ধরে বিভিন্ন ভাইরাসজনিত সংক্রমণ প্রতিরোধে রসুন ব্যবহৃত হয়ে আসছে। রসুন অ্যাজমা প্রতিরোধ করে, প্রতিরোধ করে ফুসফুসের ক্যানসারও।

৫. অ্যাভোকাডো: অ্যাভোকাডোর মধ্যে রয়েছে প্রয়োজনীয় অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এর নাম গ্লুট্যাথাইওয়ান। এর মধ্যে রোগ নিরাময়কারী গুণ রয়েছে। এটি ফ্রি রেডিকেলের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শরীরকে সুরক্ষিত রাখে। ফুসফুসকে ভালো রাখতে বেশ উপকারী খাবার অ্যাভোকাডো।

ফুসফুস ভালো রাখে যে অভ্যাস গুলোঃ

পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা কখনোই ধূমপান করেন না কিন্তু তারপরেও তাদের ফুসফুসে সমস্যা থাকে। কিন্তু অন্য দিকে যারা প্রায় ৪০ বছর ধরে ধূমপান করছেন তাদের ফুসফুসে কোন ধরণের সমস্যাই নেই। এই বিষয়টি প্রতিটি মানুষের শারীরিক রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে। তাই আপনি ধূমপান করুন আর নাই করুন, আপনার ফুসফুসে সমস্যা হতেই পারে। এজন্য কীভাবে আপনার ফুসফুসকে পরিষ্কার করবেন দেয়া হল কিছু পদ্ধতি। তবে ফুসফুসের সুস্থতায় আপনাকে অবশ্যই সব ধরণের দুগ্ধজাত খাবার হতে নিজেকে দূরে রাখতে হবে এবং ফুসফুস পরিষ্কার করার পদ্ধতিগুলোর মাধ্যমে দুগ্ধজাত খাবারের টক্সিন গুলো বের হয়ে যাবে।

১. রাতে ঘুমানোর আগে আপনি ১ কাপ হার্বাল চা পান করুন। এই চা পানের মাধ্যমে আপনার দেহ থেকে সমস্ত টক্সিন বের হয়ে যাবে যা দেহের জন্য ক্ষতিকর। এই পদ্ধতি মেনে চলার সময় এমন কোন কাজ করা যাবেনা যা ফুসফুসের ওপরে চাপ প্রয়োগ করে।

২. সকালে নাস্তা করার আগে ৩০০ মিলিলিটার পানির সাথে ২ টি লেবুর রস চিপে পানির সাথে মিশিয়ে পান করুন।

৩. আঙুর বা আনারসের জুস বানিয়ে পান করুন, কারণ এই দুটি ফলের জুসে রয়েছে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমদের দেহের শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়ার পদ্ধতিকে উন্নত করে।

৪. সকালের নাস্তায় ও দুপুরে খাওয়ার সময়ে খাদ্য তালিকায় রাখুন গাজরের জুস। গাজরের জুস দেহের রক্তে ক্ষারের পরিমাণ বৃদ্ধি করে।

৫. দুপুরের খাবার খাওয়ার সময় কলার জুস, নারকেলের শ্বাস, পালংশাক খেতে পারেন কারণ এই খাবারগুলোর মধ্যে আছে পটাশিয়াম যা দেহের বিষাক্ত টক্সিন পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।


ফুসফুস ভালো রাখার ব্যায়ামঃ

নিয়মিত শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম ফুসফুসকে সুস্থ রাখে। বিশেষত হাঁপানি বা ক্রনিক ব্রংকাইটিসের রোগীদের ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বাড়াতে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম উপকারী। এ ছাড়া এতে শিথিলায়ন হয় বা মানসিক চাপ কমে। এ রকম কয়েকটি ব্যায়াম সম্পর্কে জেনে নিন:

*৪-৭-৮ রিলাক্সিং ব্রিদিং: পিঠ সোজা রেখে আরাম করে বসুন। ‘হুস’ আওয়াজ করে মুখ দিয়ে ফুসফুসের সবটুকু বাতাস বের করে দিন। এবার চোখ বন্ধ করে নিঃশব্দে নাক দিয়ে ১ থেকে ৪ পর্যন্ত গুনতে গুনতে গভীর শ্বাস নিন। সেটা ভেতরে আটকে রাখুন, মনে মনে ৭ পর্যন্ত গুনুন। এবার ঠোঁট গোল করে আবার ‘হুস’ করে পুরোটা বাতাস বের করে দিন ৮ পর্যন্ত গুনতে গুনতে। কয়েক সেকেন্ড বিশ্রাম নিয়ে পর পর চারবার এভাবে শ্বাস নিন। এই ব্যায়াম দিনে দুবার করা ভালো। এতে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি মানসিক চাপ কমে। ঘুমও ভালো হয়।

*শ্বাস গোনার ব্যায়াম: এই ব্যায়ামে ক্রমান্বয়ে প্রশ্বাসের সময় ধীর করে আনতে হয়। মেরুদণ্ড সোজা করে বসুন। চোখ বন্ধ করে পর পর কয়েকবার গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস নিন। ধীরে ধীরে এর গতি কমে আসবে। প্রথমে প্রশ্বাস ছাড়ার সময় এক গুনবেন, তার পরের বার দুই, এভাবে পাঁচ পর্যন্ত। তারপর আবার নতুন করে এক দিয়ে শুরু করুন। এই ব্যায়ামটি দিনে ১০ মিনিট করবেন। এটি এক ধরনের মেডিটেশন বা ধ্যান। এটি মস্তিষ্ককে সজাগ করে ও মনঃসংযোগ বাড়ায়। মানসিক চাপ কমায়।

*বেলো ব্রিদিং: মুখ বন্ধ করে চটপট নাক দিয়ে ঘন ঘন শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার ব্যায়াম এটি। প্রতি সেকেন্ডে তিনবার শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার চেষ্টা করুন। শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার সময়টি সমান থাকবে। এতে বুকের ও বক্ষচ্ছদার মাংসপেশির দ্রুত ব্যায়াম হবে। তারপর কিছুক্ষণ স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিন। ১৫ সেকেন্ডের বেশি নয়। এটি যোগব্যায়ামের একটি কৌশল। এতে ক্লান্তি ঝরে যায় এবং কর্মস্পৃহা ও উদ্যম বাড়ে।

ফুসফুস মানবদেহের একটি অত্যাবশ্যকীয় অঙ্গ। মানবদেহে লালচে বাদামি রঙের এই অঙ্গটি থাকে। পেটের ওপর বুকজুড়ে হূৎপিণ্ডের দুই পাশে ফুসফুসের অবস্থান। ইংরেজিতে এর নাম লাঙ। ফুসফুসকে আবৃত করে রাখা পাতলা পর্দা দুটিতে কোনো কারণে প্রদাহের সৃষ্টি হলে প্রতিক্রিয়াস্বরূপ পর্দা দুটির মাঝখানের শূন্যস্থানে থাকা তরলের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এ তরল পানি, রক্ত-পুঁজ ইত্যাদি যে কোনো জাতীয় হতে পারে। অনেক সময় পর্দা দুটির মাঝখানে শুধু বাতাসও জমতে পারে। সাধারণভাবে দুই পর্দার মাঝখানে থাকা তরলের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে তাকে প্লুরাল ইফিউশন বলে। এ রোগ বুকের একদিকে বা উভয় দিকেই হতে পারে। রোগীসাধারণত কাশি, শ্বাসকষ্ট, জ্বর এবং যে দিকে তরল জমা বৃদ্ধি পায় সেদিকে বুকে ব্যথা অনুভব করে। অনেক সময় তরল বৃদ্ধির পরিমাণ অল্প হলে রোগী কোনো ধরনের সমস্যা অনুভব নাও করতে পারে। ফুসফুসজনিত বা ফুসফুসবহির্ভূত কারণে এ ধরনের তরল বৃদ্ধি পেতে পারে। ফুসফুসজনিত কারণগুলোর মধ্যে যক্ষ্ণা বা টিবি রোগ অন্যতম প্রধান কারণ। প্রায় ৮০ ভাগ মানুষের এই তরল বৃদ্ধি বা পল্গুরাল ইফিউশনের কারণ এই যক্ষ্ণা বা টিবি রোগ। এ ক্ষেত্রে রোগী কাশি, সান্ধ্যকালীন অল্প জ্বর ও দ্রুত ওজন হ্রাসের মতো লক্ষগুলো অনুভব করে।

ফুসফুসজনিত অন্য কারণগুলোর মধ্যে নিউমোনিয়া, ভাইরাসজনিত জ্বর, ফুসফুসের ক্যান্সার অন্যতম। নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগী সাধারণত কাশি, কাশির সঙ্গে রক্ত পড়া, উচ্চমাত্রার জ্বর ও আক্রান্ত দিকে তীব্র বুকের ব্যথা নিয়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে পারে। শিশু ও বয়স্ক রোগীরা এ রোগে অধিকহারে আক্রান্ত হয়। ভাইরাসজনিত ফুসফুস আক্রান্ত হলে প্লুরিসির সৃষ্টি হয় এবং রোগী শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় তীব্র ব্যথা অনুভব করে। ফুসফুসের ক্যান্সার হলে তা প্লুরায় ছড়াতে পারে কিংবা অনেক সময় প্লুরাতে ক্যান্সার হতে পারে। উভয় ক্ষেত্রেই আক্রান্ত দিকে পানি অথবা তরল জমতে পারে। এসব ক্ষেত্রেও রোগী কাশি, কাশির সঙ্গে রক্ত যাওয়া, জ্বর, বুকে ব্যথা ইত্যাদি উপসর্গ অনুভব করতে পারে। সে ক্ষেত্রে টেট্রাসাইক্লিন বা ব্লিওমাইসিন ইনজেকশন আবরণী পর্দার দু’স্তরের মাঝখানে প্রয়োগ করে স্তর দুটিকে পরস্পরের সঙ্গে জোড়া লাগানোর মাধ্যমে আপাত শূন্য স্থানটিকে বিলোপ করা হয়। ফলে পানি অথবা তরল বার বার জমার জন্য প্রয়োজনীয় স্থানটুকু পায় না। সঠিক সময়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত চিকিৎসা গ্রহণ ও ওষুধ সেবন করলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এ রোগ থেকে সম্পূর্ণ আরোগ্য লাভ করা যায়।