• সোমবার ২০ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১১ জ্বিলকদ ১৪৪৫

আজকের পটুয়াখালী
ব্রেকিং:
চাকরির পেছনে না ছুটে যুবকদের উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান ‘সামান্য কেমিক্যালের পয়সা বাঁচাতে দেশের সর্বনাশ করবেন না’ ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আগামীকাল ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির আহতদের চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী টেকসই উন্নয়নের জন্য কার্যকর জনসংখ্যা ব্যবস্থাপনা চান প্রধানমন্ত্রী বিএনপি ক্ষমতায় এসে সব কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয় চমক রেখে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করল বাংলাদেশ শেখ হাসিনার তিন গুরুত্বপূর্ণ সফর: প্রস্তুতি নিচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের ভিসা অনুমোদনের সময় বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ এআইকে স্বাগত জানায় তবে অপব্যবহার রোধে পদক্ষেপ নিতে হবে ছেলেরা কেন কিশোর গ্যাংয়ে জড়াচ্ছে কারণ খুঁজে বের করার নির্দেশ প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন নতুন প্রজন্ম গড়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর এসএসসির ফল প্রকাশ, পাসের হার যত ছাত্রীদের চেয়ে ছাত্ররা পিছিয়ে, কারণ খুঁজতে বললেন প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর কাছে এসএসসির ফল হস্তান্তর জলাধার ঠিক রেখে স্থাপনা নির্মাণে প্রকৌশলীদের আহ্বান প্রধানমন্ত্রী দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে টেকসই কৌশল উদ্ভাবনের আহ্বান

শীতে প্রাদুর্ভাব ঘটতে পারে নিপা ভাইরাসের

আজকের পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ২৭ নভেম্বর ২০১৮  

 


নিপা ভাইরাস এর প্রাদুর্ভাব বাংলাদেশ এ খুব বেশি দিন ধরে নয়।তবে হঠাত প্রাদুর্ভাবে এটি ব্যাপক মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়

**আসলে কী এই নিপা ভাইরাস?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা WHO এর মতে নিপা ভাইরাস (NiV) সংক্রমণ এক নতুন ধরনের zoonosis  প্রকৃতির ভাইরাস সংক্রমণ  যা  মানব শরীরে নানান গুরুতর  শ্বাসজনিত মারন রোগ থেকে ক্ষতিকর এনসেফাইলাইটিস  রোগের সৃষ্টি করছে । Zoonosis হল এমন ধরনের রোগ  যা পশু থেকে মানুষের শরীরে সংক্রামিত হতে পারে।

WHO, এই ভাইরাসের  প্রাথমিক বাহক হিসাবে শুকরকে চিহ্নিত করেছে। তবে  ফল ভক্ষনকারী অনেক পশু-পাখিও এই ভাইরাস বহন করতে পারে। নিপা বা নিভ প্রধানত বাদুর জাতীয় পশুর থেকেই ছড়ায়।  নিপা অপেক্ষাকৃত নতুন ভাইরাস যা অতি সহজেই বাদুর জাতীয় তৃণভোজী প্রাণীর থেকে মানুষের দেহে প্রবেশ করে। শুধুমাত্র বাদুর নয়, নিপা শূকরের বর্জ থেকেও ছড়ায়।

১৯৯৮ সালে মালয়েশিয়ার নিপাতে প্রথম এই ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেয়। সেখানে বাড়ির পোষ্য কুকুর, বেড়াল, ঘোড়া, ছাগলের দেহে এই ভাইরাসের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। ওই অঞ্চলে প্রতিটি বাড়িতেই শূকর প্রতিপালন হয়। গবেষণার পর দেখা যায়, ওই শূকরদের থেকেই নিপার প্রভাব ছড়িয়েছে পোষ্যদের দেহে। এরপর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে।

অভিজ্ঞ ভাইরোলজির  অধ্যাপক দের মতে , বাতাসের মাধ্যমে এই ভাইরাস সংক্রমণ সম্ভব নয়। যদি কোন ব্যক্তি এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে আসে বা এই ভাইরাসে আক্রান্ত কোন পাখির খাওয়া ফল খায়, তখনই এই ভাইরাসের সংক্রমণ সম্ভব।

এখনও পর্যন্ত এই ভাইরাস আক্রান্ত মানুষ বা পশুর জন্য কোন প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হয়নি। আর তাই একমাত্র প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে উপযুক্ত চিকিৎসা তত্ত্বাবধানে রোগীদের বাঁচানো সম্ভব।

**নিপা ভাইরাস সংক্রমণের লক্ষণ কী?

চিকিৎসকদের মতে, নিপা ভাইসারের আক্রমণে মৃত্যুর আশঙ্কা শতকরা ৭০ শতাংশ।   সাধারণভাবে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে প্রথমে আপনার যেসমস্ত শারীরিহেল্‌থহেল্ক‌থ অসুস্থতা  দেখা যাবে সেগুলি হল শ্বাসকষ্ট, বমি বমি ভাব বা বমি করা,  জ্বর এবং মাথা যন্ত্রণা ও ঝিমুনি। ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার ৩–১৪ দিনের মধ্যে এই উপসর্গ শুরু হয়ে,  যা হেল্‌থএক থেকে দুই সপ্তাহ পর্যন্ত চলতে পারে। নিপা ভাইরাসে আক্রান্তদের ,  প্রাথমিক পর্যায়ে  এনকেফেলাইটিসের শিকার হতে হয়।   পরবর্তী পর্যায়ে জ্বর বাড়ে ও সেই সঙ্গে স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলেন রোগী। এরপর ধীরে ধীরে কোমাতে চলে যায় সে। আর এরপর মৃত্যু অনিবার্য।

যদি কোন ব্যক্তির এইসব শারীরিক অসুস্থতা দেখা যাচ্ছে তাহলে তাদের খুব তাড়াতাড়ি ডাক্তারদের পরামর্শ নেওয়া উচিত এবং বাড়াবাড়ি হলে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে যাওয়া উচিত। কারণ নিপা ভাইরাস খুব তাড়াতাড়ি সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং খুবই মারণ তার সংক্রমণ। এখনও পর্যন্ত এই রোগ নিরুপায়ের উপায় বাজারে আসেনি। ফলে, এর প্রকোপ সেভাবে আটকানো সম্ভব হয় না।

**রোগ নির্ণয়

সাধারণ পরীক্ষায় এ রোগ ধরা পড়ে না৷ থ্রোট সোয়াব, অর্থাৎ গলা থেকে তরল নিয়ে রিয়েল টাইম পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশন নামের পরীক্ষা করা হয়৷ শিরদাঁড়ার তরল, ইউরিন ও রক্ত পরীক্ষাও করতে হয়৷ সেরে ওঠার পর রোগটা নিপা ভাইরাস থেকেই হয়েছিল কিনা জানতে আইজিজি ও আইজিএম অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করে দেখা হয়৷

**নিপা ভাইরাস প্রতিরোধে যা যা করণীয় 

চিকিৎসক জয়ন্ত ভট্টাচার্য বলেন, “যেসব ফল আমরা খাই তা গাছে থাকাকালীন অনেক সময়েই বাদুর বা অন্য প্রাণীরা খেয়ে থাকে। ফলে ভাইরাস ওই ফলে থাকতে পারে। তাই ফল ও কাঁচা শাকসবজি না খাওয়াই শ্রেয়। সম্ভব হলে গরম জলে ধুয়ে শাকসবজি রান্না করা উচিত। খেজুর বা গুড় দিয়ে তৈরি খাপার সাময়িক এড়িয়ে যাওয়াই শ্রেয়।”  যেহেতু বাদুড় এই ভাইরাসের প্রধান বাহক এবং বাদুড়ের প্রিয় পানিয় খেজুরের রস  তাই দেখা গেছে খেজুরের রস পান করাই এই রোগ সংক্রমণের মুল কারন।

এছাড়া ও এই ভাইরাসে  আক্রান্ত রোগীদের দেহের তরলের মাধ্যমে  এই রোগ  চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে দ্রুত গতিতে। ঠিক এই কারনেই কেরালাতে কর্মরত এক নার্সের প্রান গেছে নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সেবা করতে গিয়ে।  তাই এই রোগ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে গেলে রোগীদের সংস্পর্শে একদম আসা যাবে না। আর যদি আসেন তাহলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে এবং জীবাণুনাশক  সাবান বা তরল দিয়ে নিজেকে পরিচ্ছন্ন করতে হবে প্রতিবার।

**সাবধানতা

অসুস্থ বা রোগগ্রস্ত শূকর, বাদুরের মতো প্রাণী থেকে যত দূরে থাকা যায় ততই ভালো। গাছ থেকে পড়ে যাওয়া ফল না খেলেই ভালো হয়। বিশেষ করে যে ফল পাখি বা বাদুরে খেয়েছে এমন

আমাদের গ্রাম গঞ্জে বাদুরের মাধ্যমে রোগ ছড়ানোর অন্যতম কারন হচ্ছে শীতকালে খেজুরের রস। কাচা খেজুর রস খেলে এবং বাদুরে খাওয়া আম, ডুমুর ইত্যাদি ফল খেলে নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা  থাকে। 


নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এমন সন্দেহ হলে চিকিৎসক এর শরণাপন্ন হয়ে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে।